দূরত্বের দিক থেকে সূর্য থেকে মঙ্গলগ্রহের অবস্থান চতুর্থ। বুধের পর সৌরজগতের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম গ্রহ। আয়রন অক্সাইডে পরিপূর্ণ মাটির কারণে লালচে কমলা রঙের পৃষ্ঠ বলে মঙ্গল পরিচিত লাল গ্রহ নামেও। পৃথিবী থেকে আকাশে সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবেও দেখা দেয় মঙ্গল।
মঙ্গলের বন্ধুর, পোড়া পাথুরে মাটির নিচে বইছে তরল পানির প্রবাহ, তাও এতো বেশি যে ওই পরিমাণ পানি দিয়ে আস্ত এক সমুদ্র হয়ে যাবে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা'র প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস জার্নালে সোমবার প্রকাশ করা হয় প্রতিবেদনটি।
২০১৮ সালে মঙ্গলপৃষ্ঠ স্পর্শ করা নাসার ইনসাইট ল্যান্ডার রোবট গ্রহটির ভূতাত্ত্বিক তরঙ্গ বিশ্লেষণ করে। দু'বছর আগে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত চার বছরের বেশি সময় ধরে মঙ্গলের বুকে ১ হাজার ৩০০ এর বেশি কম্পন রেকর্ড করে আউটার-স্পেস রোবোটিক এক্সপ্লোরারটি। ওই কম্পনের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে ভূগর্ভের পানিপ্রবাহকে।
২০১৫ সালে মঙ্গলে তরল লবণপানির সন্ধান পায় নাসা। তবে, এবারের অনুসন্ধান আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ গ্রহের ভূগর্ভের সাড়ে ১১ থেকে ২০ কিলোমিটারের মধ্যকার ফাটলে মিলেছে পানির বিশাল ভাণ্ডার। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া স্যান ডিয়েগোর গবেষক দলের মতে, গ্রহের ইলাইসিয়াম প্ল্যানিশিয়া অঞ্চল থেকে সংগৃহীত এ তথ্য যদি পুরো মঙ্গলের বাকি অঞ্চলেও প্রাসঙ্গিক হয়, তার মানে দাঁড়াবে- এই পরিমাণ পানি পুরো পৃথিবীকে ডুবিয়ে দিতে পারবে এক থেকে দুই কিলোমিটার উচ্চতায়।
গবেষকরা বলছেন, পৃষ্ঠ থেকে অনেকটা গভীরে তরল পানির সন্ধান মানে অতি ক্ষুদ্র প্রাণের জন্য সহায়ক পরিবেশ গ্রহটিতে অতীতে ছিল বা এখনও আছে। আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য গ্রহের বুকে খননকাজের জন্য ড্রিল মেশিনসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম পাঠাতে হবে, যা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল।