তথ্য-প্রযুক্তি , প্রযুক্তি সংবাদ
দেশে এখন
0

ডাটা সেন্টারের আগুনের সঙ্গে ইন্টারনেট বন্ধের সম্পর্ক নেই, মিথ্যাচার করেছেন পলক

শাটডাউন সংক্রান্ত প্রাথমিক প্রতিবেদন

ডাটা সেন্টারে আগুন লাগার সাথে ইন্টারনেট বন্ধের কোন সম্পর্ক ছিল না। মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট শাটডাউন সংক্রান্ত প্রাথমিক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আজ (মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট) প্রাথমিক প্রতিবেদনের তথ্য প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ডাটা সেন্টার আগুন লাগার সাথে ইন্টারনেট বন্ধের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ইন্টারনেট বন্ধের সাথে ডাটা সেন্টারে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি সম্পৃক্ত করে প্রচারণার মাধ্যমে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জাতির সাথে মিথ্যাচার ও প্রতারণা করেছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন দেশে একাধিকবার মোবাইল ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ ও চালু করা হয়। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয় এবং বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।

দেশব্যাপী মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট শাটডাউনের কারণ এবং সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের নির্দেশক্রমে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৭ (সাত) সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত কমিটি প্রাথমিক প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১৫-১৬ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট এবং গত ১৮ জুলাই ২০২৪ থেকে ২৩ জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। এর পর ৫ আগস্ট পুনরায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ করা হয় এবং পরে চালু করা হয়।

ইন্টারনেট চালু ও বন্ধের বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রশাসনিক অনুমোদন নেয়া হয় নি। এ অনুমোদন ছাড়াই ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের মৌখিক নির্দেশক্রমে বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদের নির্দেশনায় বন্ধ ও চালু করা হয়।

অন্যদিকে, গত ১৭ জুলাই ২০২৪ থেকে ২৮ জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত এবং ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ও চালু করার বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) নির্দেশনায় সম্পন্ন হয়।

উল্লেখ্য, প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায় যে, বর্ণিত সময়ে ডাটা সেন্টারে আগুন লাগার সাথে ইন্টারনেট বন্ধের কোন সম্পর্ক ছিল না।

ইন্টারনেট বন্ধের সাথে ডাটা সেন্টারে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি সম্পৃক্ত করে প্রচারণার মাধ্যমে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জাতির সাথে মিথ্যাচার ও প্রতারণা করেছেন। এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত চলমান আছে।

এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে দেশে গত ১৭ জুলাই (বুধবার) রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেট ও ১৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) রাত নয়টার দিকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়।

টানা পাঁচ দিন সব ধরনের ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ ছিল। মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ছিল ১০ দিন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, মেসেঞ্জার থেকে শুরু করে মেসেজিং প্লাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপের মতো পরিষেবা বন্ধ ছিল ১৩ দিন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়া হলে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এদিনও সকাল থেকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ ছিল। পরে দুপুরের দিকে প্রথমে ব্রডব্যান্ড ও পরে মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ চালু করে দেয়া হয়।

এর পরদিন ৬ আগস্ট (মঙ্গলবার) শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিকেল ৩টার দিকে আটক হন সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ থেকে তাকে আটক করা হয় বলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) একটি সূত্র সে সময় জানিয়েছিল। ভারতের দিল্লিতে যাওয়ার জন্য তিনি বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে অবস্থান করছিলেন বলে জানা গিয়েছিল।

tech