কোটা বিরোধী আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এরপর ২০২১ সালে ওই প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল। গত ৫ জুন রায় দেয় হাইকোর্ট। রায়ে পুনরায় কোটা বহাল রাখার আদেশ দেন উচ্চ আদালত। এরপরই বাধে বিপত্তি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ১ জুলাই থেকে শুরু হয় কোটা বিরোধী কর্মসূচি। দাবি আদায়ে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যেতে অনঢ় অবস্থানে তারা।
এমন অবস্থায় কোটা বিরোধী আন্দোলন নিয়ে সরকারের ৪ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ধানমন্ডিতে বৈঠক শেষে আদালতের বিষয় আদালতের ওপর ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, 'আদালতে যে বিষয় বিচারাধীন রয়েছে সে বিষয়ে মন্তব্য করবো না। যারা আন্দোলন করছে তাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে। সরকার এরিইমধ্যে এই বিষয়ে আপিল করেছে।'
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, 'কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। আলাপ আলোচনা নিজেদের মধ্যে হচ্ছে।'
এদিকে, বিএনপি কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, 'আমরা আপিল করেছি আদালত এখনো রায় দেয়নি। এর মধ্যে আমরা কীভাবে এখানে হস্তক্ষেপ করি। এখানে পলিটিক্সের উপাদান যুক্ত হয়ে গিয়েছে কারণ এখানে বিএনপি প্রকাশ্যে তারা এই কোটা আন্দোলনের উপর ভর করেছে।'
অন্যদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের আন্দোলনকে যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন। আন্দোলনে বিএনপির ইন্ধনের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে নাকচ করেন তিনি।
তিনি বলেন, 'ছেলেদের যে দাবি তাতে আমরা সমর্থন করি। কারণ এইটা অন্তত যৌক্তিক দাবি। আমরা এখানে ইন্ধন দিতে যাবো কেন?'
বিচারাধীন বিষয়টি আদালতের ওপর ছেড়ে দিয়ে আন্দোলনকারীদের রাজপথ ছেড়ে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন। পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি পাবার পর আপিল শুনানির কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, 'আদালত আদেশ দিয়েছে সেটার প্রেক্ষিতে সরকার আপিল করেছে। এমন অবস্থায় তাদের রাজপথ ছেড়ে আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা করা।'
গেল ৫ জুন হাইকোর্টের দেয়া রায়ের পর সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বহাল থাকে। সে অনুযায়ী এখন থেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ, নারী কোটা ১০ শতাংশ, জেলা কোটা ১০ শতাংশ, উপজাতি ৫ শতাংশ ও প্রতিবন্ধীদের এক শতাংশ কোটা পদ্ধতিতে নিয়োগ অব্যাহত আছে।