নওগাঁর বিভিন্ন মাঠে এখন শোভা পাচ্ছে ভুট্টা। কোথাও পরিপক্ক ভুট্টা উঠানোর কাজে ব্যস্ত আছে কৃষক। আবার কোথাও দেরিতে রোপন করায় চলছে সেচ ও পরিচর্চার কাজ। উৎপাদন খরচ ও পরিশ্রম কম, ফলন বেশি এবং দাম ভাল পাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে ভুট্টা চাষে।
নওগাঁর মান্দা উপজেলার মধ্যমৈনম গ্রামের কৃষক মোরশেদ। গত ৮ বছর ধরে ভুট্টার আবাদ করছেন তিনি। এ বছরও করেছেন ২ বিঘা জমিতে। জমি চাষাবাদ, বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ, রোপন, শ্রমিক ও কাটা-মাড়াইসহ বিঘাপ্রতি খরচ ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। এতে ফলন হবে অন্তত ৩৫ থেকে ৪০ মণ। গত বছর ১ হাজার ১০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছেন। সেখানে খরচ বাদে দুই বিঘা জমিতে লাভের পরিমাণ ৪৮ হাজার টাকা।
মোরশেদ বলেন, 'হাল চাষ থেকে শুরু করে ফসল তোলা পযৃন্ত ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ পরে। গত বছর ১ হাজার ১০০ টাকা মণ বিক্রি করেছিলাম। এবার এখনও পসল উঠাইনি। এ বছর বাজরে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দাম আছে।'
ধান, আলুসহ অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টা চাষে খরচ ও পরিশ্রম কম, ফলন বেশি এবং রোগবালাইয়ের ঝুঁকি নেই বললেই চলে। লাভজনক হওয়ায় অন্যান্য ফসল কমিয়ে এখন ভুট্টার আবাদে ঝুঁকছেন কৃষকরা। এ বছরও ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।
কৃষি বিভাগ জানায়, ভুট্টা মাঝারি ও উঁচু জমিতে চাষাবাদ হয়ে থাকে। কৃষকরা উন্নত জাতের মিরাক্কেল, তাজমেরি, সানসাইন ও সুপারসাইন জাতের ভুট্টার আবাদ করেছে। এ বছর সরকারি প্রনোদনায় ৬ হাজার ৩০০ জন কৃষককে ২ কেজি বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও ২০ কেজি এমওপি সার দেয়া হয়েছে।
নওগাঁর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'রবি মৌসুমে প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে ভুটটা চাষ হয়ে থাকে। খরিপ মৌসুমেও আমাদের এ জেলায় প্রায় ৭৬০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। তবে ভুট্টার বাজারমূল্য ভালো হওয়ায় আশা করি আগামীতে রবি মৌসুমের পাশাপাশি খরিপ-১ মৌসুমেও ভুট্টা চাষ বাড়বে।'
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এ বছর ৭ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। যা থেকে ৭৩ হাজার টন ভুট্টা উৎপাদনের আশা। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা।