শ্রীকান্ত বোলা, পুরো দুনিয়া যখন তাঁকে দূরে ঠেলে দিয়েছে, তখন তিনি প্রমাণ করেছেন মনের জোর আর ইচ্ছে থাকলেই সব সম্ভব। সিনেমার চেয়ে বৈচিত্র্যময় অদম্য শ্রীকান্ত বোলার জীবনী নির্ভর সিনেমা 'শ্রীকান্ত' মুক্তি পায় ১০ মে। সিনেমার ট্রেলার মুক্তি পাওয়ার পরই দর্শক মনে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
![](https://images.ekhon.tv/srikanth bolla and rajkumar rao.webp)
১৯৯২ সালে এক চাষীর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শ্রীকান্ত বোলা। অন্ধ্রপ্রদেশে জন্ম নেয়া শ্রীকান্তের জীবন বিধাতা আজন্মই অন্ধকারে ঢেকে দিয়েছেন। গ্রামের অনেকেই এই শিশুকে অনাথ আশ্রমে রেখে আসার পরামর্শ দেয় তার মা-বাবাকে। কিন্তু তার বাবা-মা তাতে রাজি ছিলেন না।
![](https://images.ekhon.tv/srikanth bolla.webp)
বড় হয়ে উঠতে উঠতে শ্রীকান্ত উপলব্ধি করেন যে তার শিক্ষক ও সহকর্মীরা তাকে অনেক উপেক্ষা করছেন। স্কুলেও তাকে সবসময় বসতে দেওয়া হতো পিছনের সারিতে। জীবনচলার পথে চরমভাবে অপমানিত হতে হয় শ্রীকান্তকে। অনেক সংগ্রাম করে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ডের পরীক্ষায় তিনি ৯৮ শতাংশ নম্বর পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। তারপর আইআইটি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেও কেউ তাকে সহযোগিতা করতে রাজি হয়নি। হয়তো বিধাতার হিসেব ছিল ভিন্ন।
![](https://images.ekhon.tv/srikanth-bolla.webp)
জীবনযুদ্ধে দমে না গিয়ে শ্রীকান্ত আমেরিকার শীর্ষ প্রযুক্তি শিক্ষাকেন্দ্রে ভর্তির আবেদন করেন। এবং তিনিই ইতিহাসের প্রথম আন্তর্জাতিক দৃষ্টিহীন ছাত্র। লেখাপড়া শেষ করে সেখানে জীবনযাপনের সুযোগ থাকলেও তিনি ভারতে ফিরে আসেন। এবং বোলান্ট ইন্ডাস্ট্রিজ নামে নিজের ব্যবসা শুরু করেন। কয়েকদিন যেতেই সেই কোম্পানি এত বিখ্যাত হয়ে ওঠে যে রতন টাটা পর্যন্ত সেই সংস্থায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন।
![](https://images.ekhon.tv/srikanth bolla-3.webp)
অন্ধকার জীবন থেকেই আলোর মশাল জ্বেলেছেন শ্রীকান্ত। সাথে আলোকিত করেছেন আরো অনেকের জীবন। ২৯ বছর বয়সে গড়ে তুলেছেন কোটি টাকার ব্যবসা। ২০১৮ সালের মধ্যে কোম্পানিটি ১৫০ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করে এবং প্রচুর লোকের কর্মসংস্থান জুগিয়েছে শ্রীকান্ত। ২০১৭ সালে শ্রীকান্ত আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিন ফোর্বসের ৩০ জন শ্রেষ্ঠ এশিয়ান বিজনেসম্যানের তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন শ্রীকান্ত বোলা।
![](https://images.ekhon.tv/srikanth bolla.avif)
সিনেমাতে শ্রীকান্ত বোলার চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলেছেন অভিনেতা রাজকুমার রাও। সিনেমাটি যাতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা উপভোগ করতে পারেন এর জন্য নতুন প্রযুক্তির সহায়তা নিয়েছেন নির্মাতারা। ‘শ্রীকান্ত’ পরিচালনা করেছেন তুষার হিরানন্দানি।