যশোর সদরের ডাকাতিয়া, মধুগ্রাম, বাঘারপাড়ার দরাজহাট ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের লিচুর বাগানগুলোতে চলছে ব্যস্ততা। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাছে মুকুল এসেছে ভালো। গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগান মালিকরা। সামনে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবছর ভালো ফলনের আশা তাদের।
একজন বাগান মালিক বলেন, 'গাছে প্রচুর মুকুল আসছে। গাছে গাছে মৌমাছি লাগছে, এতে গাছের মুকুলগুলো ভালো দাঁড়াবে, ফলগুলো ভালো হবে। ফলন যদি ভালোভাবে ওঠে তাহলে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা হবে। আর খরচ এক থেকে দুই লাখ টাকা হচ্ছে।'
সদরের বোলপুর গ্রামের ইউসুফ আলী তার ৩ বিঘা জমিতে লিচু গাছ লাগিয়েছেন ৫০টি। এবার ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার লিচু বিক্রির লক্ষ্য তার।
লিচু চাষী ইউসুফ আলী। ছবি: এখন টিভি
ইউসুফ বলেন, 'ঝড়ো বাতাস না হলে এবার তিন থেকে চার লাখ টাকা বিক্রি করা সম্ভব হবে। মৌমাছি থাকলে ফলন ভালো হয়, কিন্তু মৌমাছি না থাকলে ফলন ভালো হয় না।'
এদিকে, লিচু গাছের নিচে মৌ-বাক্স স্থাপন করে মধু সংগ্রহ করছে মৌয়ালরা। প্রাকৃতিক মধু সংগ্রহের মাধ্যমে বাড়তি আয় করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা।
একজন মৌয়াল বলেন, 'একেকটা ফুলের মধু একেক রকম স্বাদ হয়। মধু সবগুলোরই একই গুণাগুণ। কিন্তু লিচুর মধুতে আলাদা একটা ফ্লেভার আছে। এটা পর্যাপ্ত মিষ্টি। যদি ফুল ভালো থাকে তাহলে এখান থেকে ৫০ মণ মধু পাওয়ার আশা করছি। এতে ৬ লাখ টাকা আসবে।'
এবছর জেলায় ৬২৫ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ায় ৩ হাজার ৪৪০ টন ফল উৎপাদন হবার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, 'বাজারমূল্য হিসেবে শুধু লিচু থেকে প্রায় ৭০ কোটি টাকা আয় হবে। এছাড়াও মৌচাকের মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি টাকা লাভবান হবে।'
লিচুর উৎপাদন বাড়লে মধু সংগ্রহে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বাড়তি আয়ের উৎস সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন কৃষিবিদরা।