কৃষি , গ্রামীণ কৃষি
অর্থনীতি
0

বরিশালে প্রথমবারের মতো সরিষা খেতে মধু উৎপাদন

সরিষা খেত থেকে মধু সংগ্রহ পদ্ধতি দেশে বেশ পুরনো হলেও বরিশালে হচ্ছে প্রথমবার। এতে প্রচুর মধু উৎপাদনের পাশাপাশি বাড়ছে সরিষার ফলন। কৃষি বিভাগের দাবি, মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহের ফলে সরিষার ফলন বাড়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ।

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে হলুদ সরিষা ফুল। খেতের পাশে বসানো শত শত মৌবাক্স। মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌমাছির দল।

এই পদ্ধতিতে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ দেশে নতুন কিছু না। তবে, বরিশালে এবারই প্রথম ১০৫টি বক্সের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ শুরু করেছেন টাঙ্গাইলর মৌচাষি মুন্না খান। যিনি গেল ৩ মাসে মধু পেয়েছেন প্রায় ২০ মণ। যার বাজার মূল্য প্রায় ৪ লাখ টাকা।

মধুচাষি মো. মুন্না বলেন, 'আমি ৭০ হাজার টাকা দিয়ে ১১ টি বাক্স নিয়ে শুরু করেছিলাম। এখন আল্লাহর রহমতে আমার অনেক বাক্স। প্রতিবছর মৌমাছি বিক্রি করি। একটা বাক্সে ভালো মধু আসলে ১ মণ মধু আসে পুরো ৬ মাস।'

শুধু মধু নয় চাকসহ বিক্রি হচ্ছে মৌমাছিও। ৩-৪ হাজার মৌমাছি ও ৮টি ফ্রেমসহ প্রতিটি মৌবাক্স বিক্রি হচ্ছে ৬ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকায়। আর খেত থেকে প্রতিকেজি মধু ৫শ' টাকায় পাচ্ছেন ক্রেতারা।

মধু চাষিরা বলেন, 'যারা নিচ্ছে এবং মধু  আগে খেয়েছে তারা মধুর মান ভালো পেয়েছে। তারা আশেপাশে লোকজনের বলেছে তারাও আসতেছে।'

ক্রেতারা বলেন, 'মধুর মান খুবই ভালো। দামও কম। ৫শ’ টাকা করে। একই মধু অন্য জায়গা কিনতে গেলে দেখা যায় ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা লাগে। '

এদিকে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহরের সময় পরাগায়নের ফলে বাড়ছে ফলন বৃদ্ধির সম্ভাবনা। যাতে খুশি সরিষা চাষিরাও।

সরিষা চাষিরা বলেন, 'মৌমাছির কারণে পরাগায়নের ফলে ফলন আগের তুলনায় বৃদ্ধি পাচ্ছে।'

আরেকজন বলেন, 'মধু চাষের জন্য এবারে আমাদের সরিষা ভালো হয়েছে। আগামীতে এখানে মধু চাষ হয় তাহলে আরও সরিষা ভালো হবে।'

চলতি মৌসুমে বরিশাল বিভাগে ১৭ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে । যা গেল বারের তুলনায় ১ হাজার হেক্টর বেশি। তবে এই পদ্ধতিতে মধু চাষ করা গেলে সরিষার ফলন ১৫ থেকে ২০ থেকে শতাংশ বাড়বে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

বরিশাল অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. শওকত ওসমান বলেন, 'কৃষকদের আমরা অবহিত করছি যাতে আগামীতে এই এলাকায় আরও মৌ চাষিরা মৌবাক্স স্থাপন করে।'

কৃষি বিভাগের মতে, চাষিদের আগ্রহ বাড়িয়ে সারাদেশে এই পদ্ধতি চালুকরা গেলে মধুর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বৃদ্ধি পাবে ভোজ্যতেলের যোগান। সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা, সমৃদ্ধ হবে দেশের অর্থনীতি।

ইএ