ভারত মহাসাগরে ১ হাজার ২০০টির মতো ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত মালদ্বীপ। এরমধ্যে কমবেশি ২০০টিতে জনবসতি আছে। সাড়ে ৫ লাখ জনসংখ্যার দেশটির অর্থনীতি প্রধানত পর্যটননির্ভর।
দেশের মোট প্রবৃদ্ধির ২৮ শতাংশ পর্যটনের অবদান। আর বৈদেশিক মুদ্রার ৬০ ভাগ আসে এ খাত থেকে। এছাড়া সমুদ্রসম্পদ ও জাহাজ নির্মাণ শিল্প মালদ্বীপের অর্থনীতিকে গতিশীল রেখেছে।
মালদ্বীপে পর্যটকদের বড় একটা অংশ ভারতের। ভারতীয় ধনী ও উচ্চবিত্তদের ছুটি কাটানোর প্রথম পছন্দের জায়গা মালদ্বীপ।
তবে মোদীর লাক্ষাদ্বীপ সফরের পোস্টে মালদ্বীপের তিন মন্ত্রীর আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে ভারত-মালদ্বীপের কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু। এ ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমা ও দুঃখ প্রকাশ করে মালদ্বীপের পর্যটন সংস্থাগুলো। অন্যদিকে তিন মন্ত্রীকে বরখাস্ত করে মালদ্বীপ সরকার বলছে এসব মন্তব্যের সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে লাভ হয়নি খুব একটা।
মালদ্বীপ ভ্রমণ বয়কটের ডাকে সাড়া দেয় সাধারণ ভারতীয় থেকে তারকা সবাই। এগিয়ে আসে ভারতীয় ট্রাভেল কোম্পানিও। এতেই বিপাকে পরে দ্বীপরাষ্ট্রটি। ইতোমধ্যে মালদ্বীপে ১৪ হাজারেরও বেশি হোটেল ও বিমান বুকিং বাতিল করেছে ভারতীয়রা। দেশটিতে হোটেলভাড়া কমে গেছে ২০ শতাংশ পর্যন্ত।
কমতে শুরু করেছে মালদ্বীপে ভারতীয় পর্যটকের সংখ্যা
ইজিমাইট্রিপের নির্বাহী পরিচালক প্রশান্ত পিত্তি বলেন, 'আমাদের কোম্পানি মালদ্বীপের বুকিং এবং সে দেশের পর্যটন শিল্পের প্রচার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন নিজ দেশের পর্যটন স্পট ও লাক্ষাদ্বীপের মতো জায়গাগুলোকে বেশি প্রচারের সুযোগ দেয়া হবে।'
ভারত থেকে পর্যটকরা মুখ ফেরানোয় এবার চীনের দুয়ারে কড়া নাড়ছে মালদ্বীপ। চীন সফরে গিয়ে আরও বেশি চীনা পর্যটক পাঠাতে অনুরোধ জানান প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। ভারত মহাসাগরে পর্যটন শিল্প উন্নয়নে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে দুই দেশ। ভারতের ধারণা মালদ্বীপ চীনের দিকে ঝুঁকছে। তবে ভারত চায় না তার ঘরের কাছে চীনের কোন ঘাঁটি থাকুক।
পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস নেতা মুইজ্জুর নির্বাচনী এজেন্ডা ছিল মালদ্বীপকে ভারতের প্রভাবমুক্ত করা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েই ৭৫ ভারতীয় সেনাকে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন। এছাড়া সরকার গঠনের পর মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের সফরের তালিকায় প্রথমেই থাকে ভারত।
তবে মুইজ্জু প্রথম সফরে যান ভারতের মানবাধিকার রক্ষার কড়া সমালোচক তুরস্কে, এরপরই যান চীনে। মালদ্বীপের রাজনীতিকদের একটা বড় অংশ মনে করেন, মালদ্বীপ সরকারের উচিত ভারতের কাছে ক্ষমা চাওয়া।