রংপুর মেডিকেলে শিশুদের ৯০ শয্যার বিপরীতে একদিনে ভর্তি হয়েছে ২১৬ জন। একই পরিস্থিতি খুলনাতেও। এমন বাস্তবতায় শিশু ও বয়স্কদের প্রতি আরও যত্নশীল হবার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
পৌষের বাতাসের সঙ্গে রংপুরে যোগ হয়েছে হিমালয়ের হিম। গেল দুইদিনে তাপমাত্রার পারদ নেমেছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। আশঙ্কা সত্যি করে তাই হাসপাতালে বেড়েছে নানা বয়সী মানুষের ভিড়।
রংপুর মেডিকেলের শিশু বিভাগের তিন ওয়ার্ডে রোগীর চাপ দ্বিগুণ হয়েছে। শয্যা ভাগাভাগি করে নিতে হচ্ছে চিকিৎসা। গেলো তিনদিনে রোগী ভর্তি সংখ্যায় সর্বোচ্চ হয়েছে আজ বৃহস্পতিবার। যাদের বেশিরভাগই আক্রান্ত নিউমোনিয়া, জন্ডিস, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ ঠান্ডাজনিত রোগে। এমন বাস্তবতায় পরিবারের কম বয়সী ও জেষ্ঠ্য সদস্যদের জন্য রাখতে হবে বাড়তি সতর্কতা।
এক শিশুর স্বজন জানান, ‘আমার সন্তানের বয়স ১৫ মাস। এর মধ্যে ৭ বার হাসপাতালে নিয়ে আসতে হয়েছে তাকে।’
এরেক শিশুর বাবা বলেন, ‘হঠাৎ শীত পড়ায় আমার বাচ্চাটা অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে।’
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মোস্তফা জামান বলেন, ‘শিশুদের শীতজনিত রোগগুলো বেশি হচ্ছে। শিশু অসুস্থ্য হচ্ছে কিনা এর কিছু লক্ষণ আছে, তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
এদিকে শীত নিবারনে উত্তরাঞ্চলে আগুনের তাপ নিতে গিয়ে দগ্ধ হওয়া রোগীর সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। আগুনে পোড়া রোগীর সংখ্যা কম হলেও হাসপাতালের সব বিভাগে রয়েছে শয্যা সংকটের বাস্তবতা।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনুস আলী বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে ২০০ রোগি এখানে ভর্তি থাকেন। আমাদের এখানে শিশু ওয়ার্ডে কিছু বেড সংকট রয়েছে। তারপরে সকলকে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।’
এদিকে শীতের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে খুলনায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। শিশু রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসাপাতালে ছুটছেন শিশুদের অভিভাবকরা।
নতুন বছরের শুরুতেই খুলনায় কমতে শুরু করেছে তাপমাত্রা। হাড় কাঁপানো শীতে কাবু হয়ে পড়ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। এতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র শিশু স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র খুলনা শিশু হাসপাতাল। ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে রোগী সংখ্যা এখন ২৪৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে ৫৫ জন। এরমধ্যে বেশিরভাগ শিশু আক্রান্ত হয়েছে নিউমোনিয়ায়।
এসময় শিশুদের প্রতি বাড়তি যত্নশীল হবার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
খুলনা শিশু হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রদীপ দেবনাথ বলেন, ‘আমাদের এ হাসপাতালে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে রোগী আসে। এখানে কখনোই বেড ফাঁকা থাকে না।’
খুলনা শিশু হাসপাতাল ছাড়াও নগরীর স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রেও বেড়েছে শিশুসহ সব বয়সী রোগীর সংখ্যা।