২০২৩ সাল থেকে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে শুরু হয় নতুন শিক্ষাক্রম। ২০২৪ এ সেখানে যুক্ত হতে যাচ্ছে আরও ৪টি শ্রেণি-দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম। ইতোমধ্যে ডিসেম্বরে মাধ্যমিকের অষ্টম ও নবম শ্রেণির বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। কিন্তু সেই প্রশিক্ষণ কি প্রাথমিকের শিক্ষকরা পেয়েছেন?
শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ ছাড়াই জানুয়ারি থেকে প্রাথমিকের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে শুরু হতে যাচ্ছে নতুন শিক্ষাক্রম। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের আগে নতুন শিক্ষাক্রমের ওপর তাঁদেরকে প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তাই অনুভব করেনি কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থা কী ধরনের প্রভাব ফেলবে প্রাথমিক শিক্ষায়?
দেশের ৬৫ হাজার ৫৬৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক প্রায় ৪ লাখ। এর বাইরেও বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও রয়েছে বিশাল সংখ্যক প্রাথমিক শিক্ষক। তারা মনে করেন, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ওপর দ্রুত বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখার প্রত্যাশা তাঁদের।
শিক্ষকরা বলেন, 'আমরা তৃতীয় শ্রেণির বই পেয়েছি নতুন কারিকুলামের। কিন্তু তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির প্রশিক্ষণ এখনও আমাদের হয়নি। প্রশিক্ষণ জরুরি, কারণ তখন আরও সুন্দরভাবে ও সুচারু রুপে কোমল মতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে সক্ষম হব।'
একদিকে দেশে শিক্ষক সংকট, অন্যদিকে নতুন শিক্ষাক্রম এখনো বুঝে উঠেনি অনেক শিক্ষক। তাই তাদের আগে থেকেই প্রশিক্ষণ দেয়া না হলে হলে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ব্যাহত হবার শঙ্কা শিক্ষাবিদদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, 'শতভাগ প্রস্তুতি ছাড়া বাস্তবায়ন করার প্রয়োজন নেই। সকল ক্ষেত্রে আগে প্রস্তুতি নিতে হবে। তারপর বাস্তবায়নে যেতে হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের জানান হয় তারা কিভাবে শেখাবে, না জানলেতারা কিভাবে শিক্ষার্থীদের জানাবে। তারা তো আগের মত করে শুরু করবে, আগের মত করে শুরু করলে এ কাকিকুলামের লক্ষ্য ব্যাহত হবে।'
এদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব বলছেন, ইতোমধ্যে সারাদেশে ১ হাজার ৫০০ জন মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করা হয়েছে। আগামী জানুয়ারিতে সব শিক্ষককে বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহম্মদ বলেন, 'দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বই নতুন করে তৈরি করা হয়েছে যা ১ জানুয়ারি বাচ্চারা হাতে পাবে। জানুয়ারির মধ্যে সারাদেশে এর জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।'
নতুন শিক্ষাক্রমের বিস্তরণ প্রশিক্ষণ সরকারি বেসরকারি সব শিক্ষককে দেয়া হলেও বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণ পাবেন না বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তবে তারা চাইলে এনসিটিবির সহায়তা নিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে পারবেন।