দেশে এখন , আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি
0

রপ্তানি হচ্ছে হাঁসের পালক

পালকে তৈরি হচ্ছে লেপ, তোষক, কম্বল, চাদর

সাধারণত বর্জ্য হিসেবে ভাগাড়ে ফেলে দেয়া হয় হাঁসের পালক। তবে এই পালক থেকে যে ভালো টাকা আয় করা সম্ভব তা হয়তো জানেন না অনেকেই।

নওগাঁর রানীনগরের বালুভরা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম। বংশ পরম্পরায় হাঁসের পালক সংগ্রহের ব্যবসায় যুক্ত। তার বাবা প্রয়াত মজিবর রহমান ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান ভাগের পর হাঁসের পালক বিক্রির প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। একসময় তিনি হাঁসের পালক রপ্তানি শুরু করেন। নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সেই ব্যবসা এখনও টিকিয়ে রেখেছেন তার ছেলে আব্দুস সালাম।

উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার গ্রাম ঘুরে ঘুরে অন্তত ৫ হাজার হকার ও এজেন্টের মাধ্যমে পালক সংগ্রহ করেন সালাম। পরে সেগুলো মজুত করে বাছাইয়ের পর ঢাকা ও রাজশাহীর ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। ১৮০ টাকা কেজি দরে প্রতি টনের মূল্য পান ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এভাবে তিনি মাসে লক্ষাধিক টাকার পালক বিক্রি করেন।

আব্দুস সালাম বলেন, '১০০ কেজি পালক কিনলে ৫ কেজি ঘাটতি থাকে। যে কারণে লাভ চাহিদা অনুযায়ী পাচ্ছি না। কিন্তু যতটুকু পাই তাতে মোটামুটি চলতে পারি।'

পুঁজি সংকটের কারণে রপ্তানিতে অন্য প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নিতে হয় বলে জানান তিনি। আধুনিক বাছাই মেশিনের মাধ্যমে পালক রপ্তানি করা গেলে আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় ও কর্মসংস্থান করা সম্ভব বলে জানান।

 তিনি আরও বলেন, 'অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে যাওয়ার কারণে এখন রপ্তানি করতে পারছি না। আমার জনবল বা অর্থ না থাকার কারণে চায়না এজেন্টদের কাছে দিয়ে দেই।'

আব্দুস সালামের প্রতিষ্ঠানে পালক বাছাই ও প্যাকেজিংয়ের কাজে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেকের। এক কর্মচারী বলেন, '১৯৯৪ সাল থেকে লেবার হিসেবে কাজ করছি। তখন আমার বেতন ছিল ৯০০ টাকা।'

সংশ্লিষ্টরা বলছেন হাঁসের পালক রপ্তানি একটি সম্ভাবনাময় ব্যবসা। তবে পালক থেকে পোশাক উৎপাদন করা গেলে আরও বেশি লাভ করা সম্ভব।

বিসিক শিল্প নগরীর উপ-ব্যবস্থাপক শামীম আক্তার মামুন বলেন, 'এই শিল্পটিকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষে আমরা তাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা করার চেষ্টা করছি। অপ্রচলিত হলেও এটি একটা সম্ভাবনাময় শিল্প।'

হাঁসের পালক থেকে বিদেশে প্রচুর চাহিদাসম্পন্ন মূল্যবান লেপ, তোশক, কম্বল, বিছানার চাদরসহ নানা শীতের কাপড় তৈরি হয়। এখন দেশেই এ জাতীয় পণ্য বানাতে চান ব্যবসায়ীরা। এজন্য প্রসেসিং মেশিন কিনতে সরকারি সহযোগিতার দাবি করছেন তারা।