অর্থনীতি
ভ্রমণ
0

কাপ্তাই লেক ঘিরে হাজার কোটি টাকার অর্থনীতি

শুধু সৌন্দর্যই নয়, রাঙ্গামাটির কাপ্তাই লেককে ঘিরে চলে হাজার কোটি টাকার অর্থনীতির।

রাঙ্গামাটির কাপ্তাই লেককে ঘিরে কয়েক হাজার কোটি টাকার অর্থনীতি আর ৬ লাখ মানুষের বৈচিত্র্যময় জীবনব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। এই লেকের আয়তন ৭২৫ বর্গকিলোমিটার। এ এখান  থেকে বছরে শুধু মাছ আহরণ হয় হাজার কোটি টাকার। এছাড়া গড়ে ওঠা হাট-বাজার, ফসল উৎপাদন, যাতায়াত আর পর্যটন নিয়ে লেকের কয়েক হাজার কোটি টাকার অর্থনীতি ছাড়িয়েছে। বলা হচ্ছে, পানিকে ঘিরে এক ব্যতিক্রম জীবনযাপন পদ্ধতি আর অর্থনীতির ভিত গড়ে উঠেছে এ জেলায়।

কাপ্তাই লেক, দিগন্ত বিস্তৃত নীল জলরাশির ঢেউয়ে ঘুরে প্রায় ৬ লাখ মানুষের আয়, উপার্জন, কয়েক হাজার কোটি টাকার অর্থনীতি আর এক ভিন্ন জীবনযাপন। প্রায় ৬ হাজার বর্গকিলোমিটারের রাঙ্গামাটি জেলাকে ঘিরে রেখেছে এ কাপ্তাই লেক। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় লেক  ।

লেকের মাঝে জেগে থাকা এসব পাহাড় দেখতে সমুদ্রের মাঝে ছোট দ্বীপের মতো। দ্বীপের মাঝেই বসতবাড়িসহ জীবনযাপনের নানা আয়োজন।

চলাফেরা ও মাছ ধরায় নৌকাই ভরসা। জেলার ১০ উপজেলাতো বটেই, পাশের জেলা খাগড়াছড়ি হয়ে ভারতের মিজোরাম সীমান্ত পর্যন্ত নৌকা যায় এ লেক হয়ে। দিনের বেলা ছোট বড় লঞ্চ যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায়। হালে যোগ হয়েছে স্পিডবোটও।

ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে, উৎপাদিত ফসল, মাছ, কাঠ, বাঁশ, পাহাড়িদের তৈরি পণ্য সবই আনা নেওয়া হয় বোটে। বছরে প্রায় ১০০ কোটি টাকার বাণিজ্য হয় নৌপথে।

মাছ আহরণও এ জেলার মানুষের জীবিকার অন্যতম উৎস। চাপিলা ও কাচকি মাছের জন্য বিখ্যাত হলেও  অন্যান্য মাছও ধরা পড়ে। প্রায় ৫০ হাজার মানুষ জীবিকা নির্বাহের জন্য মাছ ধরার উপর নির্ভরশীল।

মৎস্য বিভাগের হিসাবে, ২০২২ সালে ১৭ হাজার টন মাছ ধরা পড়েছে লেকে, রাজস্বসহ যার বাণিজ্যিক মূল্য ৭৫০ কোটি টাকা।

 এখানকার শিশুদের পানিতে খেলাধুলা করে বেড়ে উঠা। কারণ খেলার মাঠ বা বিনোদন কেন্দ্র এখানে নেই বললেই চলে।

কোন কোন পাহাড়ি দ্বীপে গড়ে ওঠে হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বলা যায়, পাহাড়ের বাণিজ্যকেন্দ্র।

দেখা মিলে জুমের উৎপাদিত চাল, ডাল, ফল আর পাহাড়িদের তৈরি নিজস্ব পণ্য। পর্যটক মৌসুমে ব্যবসা হয় আরো জমজমাট।

ফল ফসল উৎপাদন ও বিপণন লেকের পানির মাধ্যমেই। বছরে দেড় হাজার কোটি টাকার প্রায় ৬ লাখ টন ফল উৎপাদিত হয় পাহাড়গুলোতে।

এখানে বছরজুড়ে অনেক  পর্যটক আসে । গড়ে উঠেছে অর্ধশত বিনোদন কেন্দ্র। আছে শতাধিক রেস্টুরেন্ট, হোটেল। এছাড়া কয়েকশো পর্যটন বোট চলাচল করে লেকে। সব মিলিয়ে বছরে ২০০ কোটি টাকা লেনদেন পর্যটনে।

তবে পাহাড়ে এই বিশাল অর্থনীতি ও বিনিয়োগের প্রধান বাধা নিরাপত্তা। সেনাবাহিনী জানায়, লেকসহ পাহাড়ে ২৪ পদাতিক ডিভিশন চট্টগ্রাম এলাকায় তত্ত্বাবধানে পাহাড়ি এলাকায় আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও চাঁদাবাজি বন্ধে কাজ করছে।

আরও পড়ুন:

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর  

No Article Found!