এবারের প্রদর্শনীতে ৯ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের বিমানের অর্ডার এসেছে। দেখা মিলেছে বোয়িং, এয়ারবাসের যাত্রীবাহী বিমানের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান।
বিশ্বের এভিয়েশন খাতের জন্য নতুন আশার আলো মধ্যপ্রাচ্যের আকাশ ভ্রমণ সেবা। বিশ্ব অর্থনীতিতে কার্গো আর পর্যটন সেবার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের এভিয়েশন খাতের অংশগ্রহণ অনেক। এই খাতকে গতিশীল রাখতে প্রতিবছরই নিত্যনতুন অত্যাধুনিক যাত্রীবাহী, কার্গো আর সামরিক বিমানের প্রদর্শনী 'দুবাই এয়ার শো' আয়োজিত হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এবারের ৫ দিনব্যাপী প্রদর্শনীতে মিলেছে কোটি ডলারের বিমানের অর্ডার।
প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম এয়ারলাইন্স এমিরেটস বোয়িং আর এয়ারবাসের ৫ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের ১১০টি যাত্রীবাহী বিমানের অর্ডার মিলেছে। প্রদর্শনী থেকে বোয়িং পেয়েছে মোট ২১৪টি বিমানের ক্রয়াদেশ। অন্যদিকে, ৬৬ টি বিমানের ক্রয়াদেশ নিয়ে এয়ার শো শেষ করতে হয়েছে এয়ারবাসের। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ফ্লাইদুবাই দিয়েছে ১ হাজার ১০০ কোটি ডলারের ৩০টি বিমানের ক্রয়াদেশ। বোয়িং আর এয়ারবাসের বিমানের ক্রয়াদেশ দিয়েছে ইতিহাদ আর কাতার এয়ারওয়েজ।
প্রদর্শনীতের ঘোষণা এসেছে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে যাত্রীদের 'পাসপোর্ট ফ্রি বোর্ডিং' করবে এমিরেটস এয়ারলাইন্স। ২০২৪ সালে শুরু হবে এই কার্যক্রম। আগামী এক দশকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের এভিয়েশন খাত আধুনিকায়নে ১৯ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণাও এসেছে এই প্রদর্শনীতে। মধ্যপ্রাচ্যে এবারের আয়োজনে অংশ নিয়েছে ৯৫ টি দেশ আর অঞ্চলের ১ হাজার ৪০০ প্রতিষ্ঠান। দর্শনার্থী সমাগম ছিলো ১ লাখের ওপরে।
২০২১ সাল থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের এই প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে ইসরাইলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। প্রযুক্তিসমৃদ্ধ তেলআবিব প্রতিবছরই ক্রয়াদেশ পায় বিভিন্ন প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি আর অস্ত্রের কারখানা থেকে। তবে চলতি বছরের প্রেক্ষাপট কিছুটা ভিন্ন। গাজায় ইসরাইলের সংঘাতের কারণে এবার দর্শনার্থী সমাগম কম ইসরাইলের প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
প্রদর্শনীতে দেখা মিলেছে রাশিয়ার 'সু ফাইভ সেভেন ফেলনস' ফিফথ জেনারেশন যুদ্ধবিমানের। দেখানো হয়েছে 'সু ফাইভ সেভেন' যুদ্ধবিমানের জন্য তৈরি স্বল্পপাল্লার নতুন ক্ষেপণাস্ত্র। যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের পর রাশিয়াই তৃতীয় দেশ যাদের কাছে ফিফথ জেনারেশনের যুদ্ধবিমান আছে। মস্কো বলছে, এই বিমান যেকোন দেশের প্রতিরক্ষা খাতকে শক্তিশালী করবে। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে এই বিমান ব্যবহার করা হবে বলেও জানায় মস্কো।
বিশ্বের এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিতে মধ্যপ্রাচ্যের অংশগ্রহণ বাড়ছে। ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট এসোসিয়েশন বলছে, বছর ব্যবধানে মধ্যপ্রাচ্যে বিমানে ভ্রমণে যাত্রী সংখ্যা ৩০ শতাংশ বেড়েছে। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টই এবার রেকর্ড ভাঙা সাড়ে ৮ কোটির বেশি যাত্রীকে স্বাগত জানিয়েছে। ২০২৫ সালে এই সংখ্যা ৯ কোটি ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের।