মেঘনার ভিওসি ঘাটে শতবছরেরও বেশি সময় ধরে বসছে ধানের হাট। যা পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় মোকাম। এখান থেকে ধান কিনেই চাল তৈরি করে সরকারি গুদামে সরবরাহ করেন চালকল মালিকরা। পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের বাজারগুলোতেও চালের জোগান দেয় আশুগঞ্জের চালকলগুলো।
প্রতি মৌসুমে চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে সরকার সবচেয়ে বেশি ধান ও চাল সংগ্রহ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে। চলতি আমন মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয় গত ১৭ নভেম্বর। জেলা খাদ্য বিভাগ প্রথমে ২৭ হাজার ২১১ টন সিদ্ধ ও ৫ হাজার ৫৯৩ টন আতপ চাল এবং প্রায় ৪ হাজার টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করে। তবে বাজারে ধানের সংকটের কারণে লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কমানো হয়।
তবে গেল কয়েক মাস ধরেই আশুগঞ্জ মোকামে ধানের সংকট। যা দিন দিন আরো তীব্র হচ্ছে। ফলে দামও বেশ চড়া। বর্তমানে মোকামে প্রতি মণ মোটা ধান কেনাবেচা হচ্ছে প্রায় ১৪শ' টাকায়। এর ফলে লোকসানের অজুহাতে গুদামে চাল কম দিচ্ছেন মিল মালিকরা।
চালকল মালিকদের একজন বলেন, ‘বৈরি আবহাওয়ার কারণে ফলন কম হয়েছে। মোকামে ধানের সংকটে ধানের দাম বেশি।’
আরেকজন বলেন, ‘সরকার যে রেট বেধে দিয়েছে তার থেকে বেশি খরচ পড়ছে আমাদের এই কারণে চাল দিতে দেরি হচ্ছে।’
তবে খাদ্য বিভাগ বলছে, চুক্তি অনুযায়ী গুদামে চাল না দিলে নেয়া হবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। এছাড়া লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান-চাল সংগ্রহ না হলে বিদেশ থেকে চাল আমদানির পরিকল্পনার কথাও জানান কর্মকর্তা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তকবীর হোসেন বলেন, ‘চুক্তি যতটুকু হয়েছে তা লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি। আমরা আশাবাদী সংগ্রহ সফল হবে।’
আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান। জানুয়ারি পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে সাড়ে ১২ হাজার টন সিদ্ধ ও ৪ হাজার টন আতপ চাল। আর কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২শ ৩ টন। এবার প্রতি কেজি সিদ্ধ চাল ৪৭ টাকা, আপত চাল ৪৬ টাকা এবং ধান সংগ্রহের মূল্য ধরা হয়েছে ৩৩ টাকা কেজি।