দেশে এখন
0

নরসিংদীতে এক নারীর বিরুদ্ধে ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

নরসিংদীতে লভ্যাংশের প্রলোভন দেখিয়ে অভিনব কায়দায় অন্তত ৫শ' মানুষের পুঁজির টাকা নিয়ে লাপাত্তা এক নারী। স্থানীয় প্রভাবশালীদের নিয়ে মনোহরদী উপজেলার অরিন রহমান নামের ওই নারী গড়ে তুলেছিলেন সংঘবদ্ধ একটি চক্র। অরিনের বিরুদ্ধে ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

নরসিংদীর মনোহরদীর এখদুয়ারিয়া এলাকার বাসিন্দা রকি আহমেদ। একই এলাকার অরিন রহমান মুনমুন নামে এক নারীর সাথে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভোজ্যতেল ও চিনির ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন ১০ শতাংশ মুনাফার চুক্তিতে। প্রথমে মৌখিক চুক্তি থাকলেও পরবর্তীতে বিশ্বাসযোগ্য করতে রকিকে একটি বেসরকারি ব্যাংকের চেক প্রদান করেন ওই নারী। কিন্তু, ব্যবসার মুনাফা ও মূলধন বুঝিয়ে না দিয়ে রকির ৫৫ লাখ টাকা নিয়ে হঠাৎ লাপাত্তা হয়ে যায় অরিন।

ভুক্তভোগী মো. রকি আহমেদ বলেন, ‘৫৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছি আমি। তার ১০ শতাংশ মুনাফা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু মুনাফা তো দূরের কথা পুঁজির টাকায় পাইনি। টাকা চাওয়ায় আমাকে হুমকি দিয়েছে ও হয়রানি করেছে।’

পার্শ্ববর্তী কুড়িপাইকা গ্রামের সাব্বির হোসেনের অবস্থাও একই। অরিনের সাথে ব্যবসায় ১১ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন, কিন্তু পুরো টাকা নিয়েই উধাও অরিন।

সাব্বির হোসেন বলেন, ‘তার কাছ থেকে আমরা চেক ও স্ট্যাম্প নেই। ৫ আগস্টের পরে সে বাড়ি থেকে আত্মগোপনে চলে যায়। তার দেয়া চেক ব্যাংকে নিয়ে গেলে ব্যাংক জানায় তার অ্যাকাউন্টে কোনো টাকাই নেই।’

অভিযোগ আছে, মনোহরদী ও পার্শ্ববর্তী উপজেলার অন্তত ৫শ' মানুষের টাকা আটকে রেখে মুনাফার কথা বলে এখন লাপাত্তা ওই নারী। প্রথমদিকে মাস দুয়েক মুনাফা পায় বিনিয়োগকারীরা। তখন মুনাফা পেলেও পরবর্তীতে লভ্যাংশের টাকা পুঁজিতে যোগ হচ্ছে বলে আর লভ্যাংশ দেয়া হতো না তাদের। বিনিয়োগ ও লভ্যাংশের টাকার জন্য চাপ দেয়া হলে দেয়া হয় চেক এবং স্ট্যাম্পে লেখা চুক্তিপত্র এবং অর্থ পরিশোধের অঙ্গীকারনামা।

ব্যাংকিং জটিলতায় ব্যবসায়ের টাকা আটকে থাকার কথা বলে তা সমাধানের জন্য আরও টাকা নেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। সবশেষ, গত ৫ আগস্টের পর আর খোঁজ নেই অভিযুক্ত অরিন রহমানের।

মনোহরদীর এখদুয়ারিয়ায় অরিন রহমানের বাড়িতে গিয়েও তার দেখা মেলেনি। পরে মুঠোফোনে অরিনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি।

এদিকে, এ ঘটনায় সম্প্রতি মনোহরদী থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বাণ চৌধুরী বলেন, 'বর্তমানে যে অভিযোগ দেয়া হয়েছে সেটা নিয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। সত্যতা যাচাই করে খুব দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।'

অপরাধীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি ভুক্তভোগীদের।

ইএ