আওয়ামী লীগ আমলে পরপর কয়েকটি একতরফা নির্বাচন, মানবাধিকার, গুম-খুনের বিষয়গুলোর নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিলো তা স্পষ্ট হয় সবশেষ নির্বাচনের আগে ভিসা নিষেধাজ্ঞা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষীবাহিনীর বিরুদ্ধে স্যাংশনসহ দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের নানা ধরনের বক্তব্য বিবৃতিতে।
যদিও নির্বাচনের পর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছিলো দুদেশই। গেলো মে'তে ডোনাল্ড লুও এসেছিলেন বাংলাদেশ সফরে। সেসময় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল অতীত ঝেড়ে সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
তার ঠিক চার মাস পর মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ফের ঢাকায়। তবে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয় ড. ইউনূস।
নতুন সরকারের ১ মাসের মাথায় প্রথম কোন উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের এই সফর। তাই দুদেশের কাছেই গুরুত্ব পাচ্ছে সফরটি। দুভাগে ভাগ হয়ে দলটি ঢাকায় আসে।
আজ (শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের অর্থ বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন নেইম্যানের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের দলটি ঢাকায় অবতরণ করে। আর সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু আসেন বিকেল সোয়া তিনটায়।
বিমানবন্দরে থেকে বেরিয়েই চলে যান হোটেল ওয়েস্টিনে। সেখানেই অবস্থান করছে প্রতিনিধি দলটি। এরই মধ্যে, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল ও ইউএস এআইডি’র সঙ্গে বৈঠক করেছেন ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বাধীন দল।
এসময়, দেশের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাতের ভূমিকা রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়। রোববার সকাল থেকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র সচিব, অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠক করবে দলটি।
কুটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, এটি হতে যাচ্ছে ঢাকা-ওয়াশিংটন বহুমাত্রিক সম্পর্ক উন্নয়নের সফর। আলোচনায় গুরুত্ব পাবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক জোরদারে। এছাড়াও ব্যাংক খাতে সংস্কার, পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা, দুর্নীতি দূর করা, বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল থেকে ঋণ পাওয়া, র্র্যাব, পুলিশ ও বিচারব্যবস্থা, প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য সহায়তা পাওয়া নিয়েও আলোচনা হতে পারে।