সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দল করবে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, 'জনগণ নতুন রাজনৈতিক দল চায় কি না সেটা আগে জানতে হবে।'
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে শহীদি মার্চ করবে বলে জানায় সমন্বয়করা। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে শহীদি মার্চ শুরু হয়ে নীলক্ষেত হয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ঘুরে ফার্মগেট হয়ে শেষ হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। এছাড়া ৬ সেপ্টেম্বর থেকে চাঁদাবাজি, অনিয়ম ও বিপ্লব রক্ষায় সারাদেশের জেলা, উপজেলায় যাবে কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা।
জুলাই, আগস্টের ছাত্র জনতার তীব্র গণআন্দোলন থেকে গণঅভ্যুত্থান হয়। তোপের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। গণঅভ্যুত্থান থেকে আসে নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথ। তবে, দেশ হারায় ছয় শতাধিক তাজা প্রাণ।
শত শত শহীদের রক্তের বিনিময়ে আসা গণঅভ্যুত্থানেরে এক মাস পেরিয়েছে। দিনটি উপলক্ষে শহীদদের স্মরণে বৃহস্পতিবার সারাদেশে শহীদি মার্চ করবে ছাত্র জনতা। যার শুরু হবে রাজু ভাস্কর্য থেকে। মিছিল সংসদ ভবন পর্যন্ত গিয়ে, ঘুরে শেষ হবে শহীদ মিনারে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, 'আগামীকাল আবারও আমার ওই শহীদ ভাইদের স্মৃতিতে, স্পিরিটকে নিজের মধ্যে ধারণ করে যে আহত ভাইগুলো এখনও হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে, যে ভাইবোনগুলো হাত, পা, চোখ হারিয়েছে তাদের স্মরণ করে তাদের স্মৃতিকে ধারণ করে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে একটি শহীদি মার্চ করতে চাই। পুরো বাংলাদেশের ছাত্র জনতা আবারও প্রত্যেকের জায়গা থেকে তারা এই শহীদি মার্চে অংশগ্রহণ করবে। যেখানে ফেস্টুনে আমার শহীদ ভাইদের ছবি থাকতে পারে। তারা যে স্পিরিট ধারণ করে জীবন দিয়েছে সেই কথাগুলো থাকতে পারে।'
সেই সাথে চাঁদাবাজি, অনিয়ম ও বিপ্লব রক্ষায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ৬ সেপ্টেম্বর থেকে সারাদেশের জেলা, উপজেলায় যাবে কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা।
একজন সমন্বয়ক বলেন, 'আগামী ৬ সেপ্টেম্বর থেকে আমরা সারাদেশে বিভাগীয় সফর শুরু করবো। প্রতিটি বিভাগে টিম ভিত্তিক আমরা মানুষদের সুসংগঠিত করার চেষ্টা করবো। তাদের জন্য কিছু নীতিমালা থাকবে। তারা এই নীতিমালার বাইরে কোনো কাজ করবে না। অনেক জায়গায় দেখেছি যে সমন্বয়ক পরিচয়ে অনেকে অনেক ধরনের দুর্নীতি, সিন্ডিকেটের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে। আমরা মনে করছি তারা আমাদের লোক না। তারা আসলে আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এই কাজ করে যাচ্ছে।'
এসময় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আওয়ামি লীগের সংবিধান দেশের সংবিধান বলে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। বিপরীত মতাদর্শ দমনের রাজনীতি করা হয়েছে।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, 'আওয়ামী লীগ কিন্তু কোনো একটা রাজনীতি না। আওয়ামী লীগ ছিল একটা ধর্ম। অর্থাৎ ধর্মের অবয়বে বঙ্গবন্ধুকে একটা মোবিক হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছিল যে সবসময় থাকবে আনচেলেঞ্জড। তাকে কখনোই কোনোভাবে চ্যালেঞ্জ জানানো যাবে না। আওয়ামী লীগকে কখনও চ্যালেঞ্জ জানানো যাবে না।'
এসময় স্বাস্থ্য বিষয়ক উপকমিটি জানায়, আহত, নিহতদের হালনাগাদ তথ্য। জানায় আন্দোলনে আহত হয়ে হাসপাতালে এসেছে প্রায় ১৮ হাজার। পঙ্গু হয়েছেন দুই শতাধিক। আর সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা ৬১৭ জন।