বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পেয়েছেন ৫৭ জন বাংলাদেশি প্রবাসী। এদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, একজনকে ১১ বছর এবং বাকি ৫৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। আটকের একমাসেও সাজাপ্রাপ্ত অর্ধশতাধিক প্রবাসীর সঠিক তালিকা পাওয়া যায়নি।
তবে দণ্ডপ্রাপ্ত প্রবাসীদের সাজা মওকুফে চেষ্টা শুরু করা কথা জানিয়েছে দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাস।
আবুধাবিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর বলেন, ‘গভর্মেন্টের পক্ষ থেকে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ঢাকাতে ইউএই অ্যাম্ব্যাসি আছে তার সাথে ও তারা যোগাযোগ করছে এটা শুধু এক জায়গা থেকে না দুই জায়গা থেকেই ডাবল অ্যাপ্রোচ তারা নিয়েছে ফলে ভিয়েনা কনভেনশনে যে মেনডেন্ট আছে সেই অনুসারে আমরা কাজ করে যাচ্ছি আমাদের পক্ষে সর্বোচ্চ প্রায়োরিটিতে।'
সাজাপ্রাপ্ত প্রবাসীদের মুক্ত করার বিষয়ে আইনগত সহায়তা দিতে আমিরাতে কাজ করছেন বাংলাদেশি আইনজীবী ওলোরা আফরিন। এরই মধ্যে তিনি কারাবন্দি ২৮ প্রবাসীর নামের তালিকা পেয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা এখনও তদন্তাধীন, বাকিগুলোর রায় হয়েছে। তিনি বলছেন, এই তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত প্রবাসীরা কে কোন কারাগারে আছেন, সে তথ্যের অভাবে পুরো প্রক্রিয়া বেশ জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে; বলছেন আইনজীবী। আটকের ৩০ দিনের মধ্যে আপিলের বিষয়টিও সামনে আনেন তিনি।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইনজীবী ওলোরা আফরিন বলেন, ‘ভিক্টিমের পরিবারকে জানতে হবে তাদের স্বজনরা কোন জেলে আছে কার সাথে যোগাযোগ করবে সেটা এখন ও তদন্ত করা হয়নি । জেলা প্রশাসক তথ্য দিয়েছেন পাশের সেলের একজন ছিল যাকে সে তার স্ত্রীর কন্টাক্ট নাম্বারটা দিয়েছিলো আর এভাবেই জেলটা চেনা যায়।’
সাজাপ্রাপ্তদের জন্য আপিলে জনপ্রতি খরচ হতে পারে প্রায় তিন হাজার দিরহাম করে। ৫৭ জনের জন্য এ অঙ্ক এক লাখ ৭১ হাজার দিরহাম, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৫ লাখ টাকা।
এদিকে এই প্রবাসীদের গ্রেপ্তারের পেছনে দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেটের ইন্ধন রয়েছে মর্মে সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত খবরকে ভিত্তিহীন বলছেন কনসাল জেনারেল। তার দাবি, সাজাপ্রাপ্ত প্রবাসীদের মুক্ত করতে সাধ্যমতো সহযোগিতার চেষ্টা করা হচ্ছে।
দুবাইয়ের বাংলাদেশ কনস্যুলেট কার্যালয়ের কনসাল জেনারেল বি এম জামাল বলেন, ‘আইনগত সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করার দরকার আমরা করব। বিভিন্ন সময় আমাদের কাছে যে তথ্য চাওয়া হচ্ছে সেটি দিয়ে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করছি।’
প্রবাসীরা বলছেন, আইনি লড়াইয়ে না গিয়ে কূটনৈতিকভাবে সমাধানের পথ বের করতে হবে। প্রয়োজনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।