দেশে এখন
0

সড়কে নেই চাঁদাবাজি, স্বস্তিতে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা

অনেকটা স্বপ্নের মতো। চাঁদাবাজ নেই সড়কে। কেউ আর গাড়ি থামিয়ে মামলার ভয় দেখায় না। কেউ সড়কে দাঁড়িয়ে টাকা না দিলে গাড়ি রোধ করে না। চাঁদা শূন্য পরিবহন সেক্টরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা পকেটেই থেকে যাচ্ছে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের মালিক- শ্রমিকের।

কয়েকদিন আগেও ধাপে ধাপে টাকা দিয়ে ব্যবসা করতে হতো পরিবহন মালিকদের। রাতের ঢাকা ছিলো আরও ভয়ঙ্কর।

প্রতিদিন সদরঘাটে ২৫০টির বেশি যাত্রী পরিবহনের গাড়ি আসে। প্রতিটি গাড়ি সদরঘাট ঘুরতে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা চাঁদা গুনতে হয়। চাঁদাবিহীন পরিবহন সেক্টর স্বপ্ন ছিলো মালিক শ্রমিকদের।

অধিকাংশ যাত্রী পরিবহনের গাড়ি চালক ও কন্ট্রাক্টরের একই বক্তব্য। যেখানে প্রতিদিন ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত ধাপে ধাপে গুনতে হতো, সেখানে এখন লাগে না ১ টাকাও। এতে বছরে বেঁচে যাবে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।

এক বাস চালক বলেন, 'আগে রাস্তা খরচ গেছে ১২০০ টাকার বেশি। আর এখন ১ টাকাও লাগে না। রাস্তায় ট্রাফিক-সার্জেন্ট অনেক সমস্যা করতো।'

তবে মালিক শ্রমিকরা লাভের মুখ দেখলেও কমেনি বাস ভাড়া। আগের ভাড়াতেই যাত্রী পরিবহন করছে তারা।

পুলিশের হয়রানি নিয়ে বরাবর অতিষ্ঠ ছিলেন রিকশাচালকরা। বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ্যে তাদের চাঁদাবাজির বিষয়ও মুখ খুলেছেন তারা। এছাড়া এলাকা ভিত্তিক চাঁদাবাজির ঘটনা তো আছেই।

রিকশা সেক্টরে চাঁদাবাজি এখন শূন্যের কোটায়। এই সেক্টরে বছরে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা চাঁদার অভিযোগ ছিলো আগে থেকেই।

এক রিকশাচালক বলেন, 'আগে সড়কে উঠলেই আমাদের গাড়ি আটকিয়ে টাকা নিতো। এখন আর কেউ চাঁদা চায় না।'

পণ্য পরিবহনেও চাঁদার দেখা নেই রাস্তায়। অভিযোগ পণ্য পরিবহণে বছরে ২ হাজার কোটি টাকা চাঁদা আদায় হতো। মামলার ভয় দেখানো কিছু পুলিশ ও চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য হারিয়ে গেছে শিক্ষার্থীদের নতুন বাংলাদেশে।

পরিবহন ভাড়ায় প্রভাব ফেলে চাঁদাবাজি। তাই চাঁদাবাজিবিহীন রাস্তা কৃষি পণ্যের দাম কমাবে বলে মনে করেন কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি বলেন, 'পণ্য প্রবেশের ক্ষেত্রে আগে চাঁদা দিতে হতো। এমনকি বাজারগুলোতে চাঁদা দিতে হয়। আপাতত এটা নেই, শিক্ষার্থীরা এটা মনিটরিং করছে। তাই পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। আর সরকার পরিবর্তনের কারণে তাদের সিন্ডিকেট নিষ্ক্রিয়।'

সাধারণ মানুষের পকেটের স্বস্তি ফেরাতে চাঁদাবাজদের চিরতরে বিদায় জানানো প্রয়োজন বলে মনে করেন কৃষিবিদরা। তাই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আহবান অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার প্রধানের কাছে।

tech