২০১৭ সালের জুলাই মাসে একনেক সভায় অনুমোদন পায় চট্টগ্রামের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৫.২ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। নগরবাসীকে যানজটের ভোগান্তি থেকে রক্ষার জন্য ৩ বছর মেয়াদের এই প্রকল্প ২০২০ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে নকশা পরিবর্তন, ব্যয় বৃদ্ধিসহ নানান জটিলতায় প্রকল্পটির মেয়াদ দফায় দফায় বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন মাস নির্ধারণ করা হয়।
এরই মধ্যে ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন। তবে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার ঠিক আগে পিলারে ফাটল, ব্যয়বৃদ্ধি ও নিম্নমানের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটি। গঠন করা হয়েছে ৩ সদস্যের উপ-কমিটি। অভিযোগ তদন্তে কমিটির সদস্যরা বৃহস্পতিবার সরেজমিন পরিদর্শন করেন।
তদন্ত উপ কমিটির সদস্য মো. মজিবুর রহমান বলেন, 'আমরা এটা দেখলাম, এখন এটা নিয়ে আমরা বসবো। ডিপার্টমেন্টের টেকনিশিয়ান, ঠিকাদারদের সাথে বসে আলাপ করার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবো।'
তদন্ত উপ কমিটির সদস্য পারভীন জামান বলেন, 'অনেক অসঙ্গতি চোখে পড়েছে। এটা এখন বর্ণনা করার মতো না। কেউ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলে চোখে পড়বে।'
প্রথম দিনের পরিদর্শনে বেশ কিছু নির্মাণ ত্রুটি চোখে পড়েছে তদন্ত কমিটির। যা বিশেষজ্ঞ টিমের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে প্রতিবেদন আকারে জমা দেয়া হবে জানান তদন্ত কমিটির প্রধান এমন এ লতিফ। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলেন তিনি।
এমন এ লতিফ বলেন, 'আমরা বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করবো। তাদের অপিনিয়ন নেয়ার পর যে ভুলত্রুটি চোখে আসছে তা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।'
এদিকে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলছেন শতভাগ গুণগত মান নিশ্চিত করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ করা হয়েছে। পিলারে ফাটলের অংশ বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দলের পরামর্শে সংস্কার করা হয়েছে।
ম্যাক্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. মনির হোসেন বলেন, 'বুয়েট থেকে টেস্ট করে তারা আমাদের বলেছে, এটা যান চলাচলের জন্য ছেড়ে দিতে পারেন। এটা কোনো বড় সমস্যা না।'
চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, '১৬ কিলোমিটার ফ্লাইওভারের মধ্যে কোথাও না কোথাও একটা ডিফেক্ট থাকতেই পারে। আমরা সেগুলো ক্রমান্বয়ে চিহ্নিত করছি। যেখানে যে ট্রিটমেন্ট হওয়া দরকার, সেখানে তাই হবে।'
৩ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। তবে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের ব্যয় ১ হাজার ৪৮ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকায়।