দেশে এখন
0

সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন ওয়াকার-উজ-জামান

নতুন সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিলেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। আজ (রোববার, ২৩ জুন) ঢাকা সেনানিবাসে শপথ গ্রহণ করেন তিনি। বেলা দেড়টার দিকে নবনিযুক্ত সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান দায়িত্বভার গ্রহণ করার উপস্থিত সবাই তাকে অভ্যর্থনা জানান।

তার দায়িত্বভার গ্রহণ উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসে ছিল সাজসাজ রব। সকালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিদায়ী সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। পরে সেনাবাহিনী জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, ওএসপি, এসজিপি, পিএসসি নবনিযুক্ত সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, এসবিপি (বার), ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি, পিএইচডি এর নিকট হতে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

এ সময় মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাতবরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা শেষে, সেখানে থাকা পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন তিনি। পরে সেনাকুঞ্জে গার্ড অব অনার দেয়া হয় বিদায়ী সেনাপ্রধানকে।

পরবর্তীতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে নবনিযুক্ত সেনাপ্রধানকে 'জেনারেল র‍্যাঙ্ক ব্যাজ' পরিয়ে দেন নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন।

পরে তিনি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসময় রাষ্ট্রপতি নবনিযুক্ত সেনাবাহিনী প্রধানকে দায়িত্ব গ্রহণ করার জন্য অভিনন্দন জানান।

গত ১১ জুন ২০২৪ তারিখে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে ২৩ জুন অপরাহ্ন থেকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, ওএসপি, এসজিপি, পিএসসিকে 'জেনারেল' পদে পদোন্নতি প্রদানপূর্বক পরবর্তী ৩ বছরের জন্য সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ আদেশ জারি করা হয়। এর আগে ২০২১ সালের জুন মাসে দেশের ১৭তম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

উল্লেখ, জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, ওএসপি, এসজিপি, পিএসসি ১৯৮৫ সালের ২০ ডিসেম্বর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্য হিসেবে ১৩তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন।

সামরিক জীবনের শুরু থেকেই বিভিন্ন কোর্সে ভাল ফলাফলের ক্রমধারায় তিনি ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড ও স্টাফ কলেজ, মিরপুর থেকে সাফল্যের সাথে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তিনি জয়েন্ট সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ, যুক্তরাজ্য থেকেও গ্রাজুয়েট হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন।

তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় প্রথম শ্রেণিতে মাস্টার্স অব ডিফেন্স স্টাডিজ (এমডিএস) সম্পন্ন করেন এবং যুক্তরাজ্যস্থ কিংস কলেজ, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে মাস্টার্স অব আর্টস ইন ডিফেন্স স্টাডিজ ডিগ্রী অর্জন করেন।

তার সুদীর্ঘ ৩৯ বছরের বর্ণাঢ্য সামরিক জীবন কমান্ড, স্টাফ ও প্রশিক্ষকের অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ। তিনি ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ থেকে ৮ জুন ২০১০ পর্যন্ত ১৭ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উপ-অধিনায়ক ও অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন।

এসময় তিনি তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহ দমনে নিষ্ঠা ও বিচক্ষণতার সাথে দায়িত্ব পালন করে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ২৭ জুলাই ২০১১ থেকে ১১ নভেম্বর ২০১৩ পর্যন্ত দুই বছরেরও বেশি সময় ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি জিওসি হিসেবে ২ এপ্রিল ২০১৪ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ পর্যন্ত তিন বছর নবম পদাতিক ডিভিশন কমান্ড করেন। এরিয়া কমান্ডার, সাভার এরিয়া ও জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) নবম পদাতিক ডিভিশন হিসেবে তিনি টানা তিন বছর অত্যন্ত সফলভাবে বিজয় দিবস প্যারেড ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ এর প্যারেড কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। এই কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি "সেনা গৌরব পদক' (এসজিপি) এ ভূষিত হন। —আইএসপিআর