দেশে এখন

শেরপুরের পাহাড়ে বাড়ছে আগুনের ঘটনা

শেরপুরের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের বনভূমিতে দিনে-রাতে আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছে দূর্বৃত্তরা। আগুনে বনের গুল্ম লতাপাতার সাথে পুড়ে ছাই হয়ে হচ্ছে চারাগাছও। হুমকিতে রয়েছে পাহাড়ে বসবাসরত আদিবাসীদের জন-জীবন। এদিকে লোকবল সংকটে বনের আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে বন বিভাগ।

ভারত সীমান্ত ঘেঁষা শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ে জ্বলছে আগুন। ছড়িয়ে পড়ছে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে। এতে প্রতিনিয়তই পুড়ে যাচ্ছে গাছপালা, নষ্ট হচ্ছে মাটির গুণাগুণ আবাসস্থলের সংকট তৈরি হচ্ছে পশুপাখির।

সম্প্রতি ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ও নলকুড়া ইউনিয়নের গারো পাহাড়ে শাল-গজারির বনে অন্তত ২০ থেকে ২৫টি জায়গায় আগুনের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিবছরই শুষ্ক মৌসুমে বনে আগুনের ঘটনায় পুড়ে যায় ছোট গজারি ও শাল গাছের চারাসহ নানারকম ঔষধি, ফলজ ও বনজ গাছ। মূলত বনের জমি দখল ও গাছ কেটে নেওয়ার জন্যই আগুন দেয় দুর্বিত্তরা। বছরের পর বছর ধরে এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলেও নেই সমাধান।

স্থানীয় একজন বলেন, 'জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দেয়। পুড়ে যাওয়া শেষ হইলে জঙ্গল থেকে তো গাছ পুড়ে যায়, তারপর অনেকে সেই গাছের কিছু অংশ কেটে নিয়ে যায়।'

প্রতিনিয়ত বনের গাছপাতা ধ্বংস হতে থাকলে পরিবেশের জন্য বিপর্যয় নেমে আসবে বলছেন পরিবেশবিদরা। একইসঙ্গে হুমকিতে পড়বে পাহাড়ে বসবাসরত আদিবাসীদের জনজীবন। তাই জরিতদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান তাদের।

শেরপুর জেলার সবুজ আন্দোলনের পরিবেশবাদী সংগঠনের সভাপতি মো. মেরাজ উদ্দিন বলেন, 'বেশ কিছুদিন থেকে আগুন দেওয়া হচ্ছে। এবং এতে করে অনেক ক্ষতি হচ্ছে। পাখি মারা যাচ্ছে। পাশাপাশি এখানে গাছ মারা যাচ্ছে, যে চারাগুলো আছে সেগুলো একেবারে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হোক।'

বন বিভাগ বলছে, ময়মনসিংহ বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জের আওতায় ৩টি বিট কার্যালয় রয়েছে। এর আওতায় বনভূমি রয়েছে প্রায় ৮ হাজার ৮৮০ একর। তবে প্রয়োজনের তুলনায় জনবল কম থাকায় নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটছে বলছেন বন কর্মকর্তারা।

ময়মনসিংহ বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জের কর্মকর্তা মো. আব্দুল করিম বলেন, 'কিছু সংখ্যক দুষ্কৃতিকারীরা এই বনে আগুন লাগায়। ছোট ছোট চারাগাছগুলো পুড়ে গেলে যেন তারা কেটে নিতে পারে সেজন্য আগুন লাগায়। এর আগে এ বিষয়ে আমরা মামলাও দিয়েছি।'

বন বিভাগের তথ্য মতে, শেরপুরের ঝিনাইগাতী, শ্রীবরর্দী এবং নালিতাবাড়ী উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার একর বনভূমি রয়েছে।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর