রাজধানীসহ দেশের নানা প্রান্তে যাতায়াতের জন্য উত্তর-পুর্বাঞ্চলের জনপদের একমাত্র ভরসা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। আর একমাত্র সড়ক হওয়ায় যাত্রীদের পোহাতে হয় দুর্ভোগ। তাই সিলেটবাসীর অপেক্ষা এখন স্বপ্নের ৬ লেন প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার। তবে সেখানেও আছে জমি অধিগ্রহণের বাগড়া, ব্যহত হচ্ছে কাজ।
২০২৩ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও আশার আলো দেখেনি সিলেট অংশ। শেরপুর থেকে তামাবিল পর্যন্ত ৯২ কিলোমিটারের মধ্যে ১ বছরে কাজ হয়েছে মাত্র ৫ শতাংশ। বর্তমানে মহাসড়কের দু'পাশে চলছে ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজ। আর জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় আটকে আছে মূল সড়কের কাজ।
স্থানীয় একজন বলেন, 'সিলেট থেকে ঢাকা যেতে এখন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা সময় যায়। এই রাস্তা ৬ লেন হলে যাত্রীদের জন্য সুবিধা হবে।'
যদিও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জমি না পাওয়ায় কাজ থেমে আছে তাদের। আবার বর্ষা চলে আসার কারণে কাজ পুরোপুরি চালু করা সম্ভব না হলেও ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণে জোর দেওয়া হচ্ছে।
সিলেট প্রকল্প ৬ এর প্রজেক্ট ম্যানেজার দেবাশীষ রায় বলেন, 'আমরা কিছুটা পিছিয়ে আছি। জমিগুলো বুঝে পেলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাভার করতে পারবো বলে আশা করি। কিন্তু জমি বুঝে পেতে দেরি হলে আমাদের প্রকল্প দীর্ঘায়িত হবে।'
জেলা প্রশাসন বলছে, অধিগ্রহণ জটিলতা সমাধানে আরও সময় লাগবে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে জমি বুঝিয়ে দেবেন বলেও আশাবাদী তারা।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, 'এই প্রকল্পের কোনো জমি আমরা এখন পর্যন্ত হস্তান্তর করতে পারিনি। তবে আমরা অনেকগুলো মামলার শেষ দিকে আছি। আশা করি আগামী ৬ মাস নাগাদ আমরা জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় যেতে পারবো।'
এই মহাসড়কটি একদিকে এশিয়ান হাইওয়ে, বিমসটেক করিডোর এবং সার্ক হাইওয়ে করিডোর এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অন্যদিকে বাণিজ্যিক দিক দিয়েও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই সব দিক বিবেচনায় দ্রুত সড়কের কাজ করার তাগিদ ব্যবসায়ী নেতাদের।
সিলেট দি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্টিজ লিমিটেডের সভাপতি এমদাদ হোসেন বলেন, 'কানেক্টিভিটি মানবসভ্যতা, অর্থনৈতিক উন্নতি থেকে শুরু করে সবকিছুতে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের সিলেট চেম্বারের পক্ষ থেকে আমাদের দাবি থাকবে যতদ্রুত সম্ভব এই ৬ লেনের কাজ সম্পন্ন করা উচিত।'
২০২১ সালে প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশ কেন্দ্রবিন্দুতে থাকায় ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান ও চীনের সঙ্গে উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগের জন্যও বেশ গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক।
এগিয়ে চলছে ঢাকা সিলেট ৬ লেন প্রকল্পের কাজ, যে টি একসময় ছিল সিলেটের মানুষের কাছে স্বপ্নের মতো । এই উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ৪ বছর পর। এই কাজ শেষ হলে কেবল মাত্র এই অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থাই সহ হবে তা নয় বরং অঞ্চলের পুরো আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটের অন্যতম উৎস হতে পারে এই মহাসড়কটি।