ট্রলারডুবির ঘটনায় মেঘনায় ডুবে গেছে সোহেল রানা ও তার স্ত্রী-সন্তান। পুত্র, পুত্রবধূ ও নাতির জন্য বিলাপ করছেন কুমিল্লার আব্দুল আলিম ও রওশন আরা দম্পতি। একটু পরপরই জ্ঞান হারাচ্ছেন দু'জন। পাশে থাকা স্বজনদের সান্ত্বনায়ও থামছে না বিলাপ।
আর বাবাকে ফিরে পেতে নদীর পানে অপলক দৃষ্টি দেবী রানী সাহার। শুক্রবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় ভৈরবের মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া যাত্রীবাহী ট্রলারটিতে ছিলেন তার বাবা বেলন চন্দ্র দেসহ কয়েকজন স্বজন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন তিনি। সবাই সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ডুবে যান তিনি।
গতকাল (২২ মার্চ) বিকেল ৫টায় ভৈরব নৌকাঘাট থেকে ২০ থেকে ২২ যাত্রী নিয়ে পাশের আশুগঞ্জ উপজেলার চরসোনারামে যাত্রা করে ট্রলারটি। ফেরার পথে সন্ধ্যা ৬টায় ভৈরব প্রান্তে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর কাছে একটি বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে ট্রলারটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় সুবর্ণা বেগম নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া নিখোঁজ হন ভৈরব হাইওয়ে থানার কনস্টেবল সোহেল রানা, তার স্ত্রী মৌসুমী ও দুই শিশু সন্তান ইভা ও রাইসুলসহ ট্রলারের ৮ যাত্রী।
রাতে উদ্ধার অভিযান চালানো না গেলেও শনিবার সকাল থেকে সক্রিয় হয় ফায়ার সার্ভিস। নিখোঁজদের উদ্ধারে নামে কিশোরগঞ্জ ও ভৈরব ফায়ার সার্ভিসের ৫ জন ডুবুরির একটি দল। দুপুরের পর দু'জনের মরদেহ উদ্ধার করতে সমর্থ হয় দলটি। অনেকেই দেরি করে উদ্ধার অভিযান চালানোয় ক্ষোভ জানিয়েছেন। তবে ট্রলারের চালক মোবাইল ফোনে ব্যস্ত থাকায় এ দুর্ঘটনা বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের।
স্থানীয়রা বলেন, ‘আমরা যে নৌকা ভ্রমণ করি সেগুলোতে চালক ছোট ছেলেরা থাকে, এরা তেমন অভিজ্ঞ না।’
ফায়ার সার্ভিস বলছে, সকালে নদীতে কুয়াশা থাকায় উদ্ধার অভিযান শুরু হতে দেরি হয়েছে। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত নিখোঁজদের সন্ধান না পাওয়া যায়, ততোক্ষণ অভিযান চলবে।
কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের উপ-সহকারী পরিচালক এনামুল হক বলেন, ‘যেখানে টলার ডুবেছে সেখানে এবং পাশাপাশি স্রোত যেদিকে যাচ্ছে ওই দিকেও অভিযান পরিচালনা করা হবে। সব জায়গায় সার্চ করা হবে।’