দেশে এখন
0

সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সচেষ্ট সরকার: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশকে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায় সরকার। তাই সমুদ্র অঞ্চলে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কোস্ট গার্ডকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সচেষ্ট সরকার। সেই লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে কোস্ট গার্ডের।’

রবিবার (১০ মার্চ) বাহিনীটির ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

দেশের সমুদ্র ও উপকূলীয় অঞ্চলের নিরাপত্তায় অতন্দ্র প্রহরী বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। ১৯৯৫ সাল থেকে অবদান রাখছে মৎস্য, বনজ সম্পদ ও পরিবেশ রক্ষায়। ভূমিকা রাখছে মাদক নিয়ন্ত্রণ, চোরাচালান ও জলদস্যু দমনেও।

বাহিনীটির সদর দপ্তর আগারগাঁওয়ে ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে কোস্ট গার্ড সদস্যদের পাশাপাশি অংশ নেন সামরিক ও বেসামরিক অতিথিরা।

বীরত্ব ও সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তা, নাবিক ও বেসামরিক ৪০ জনকে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে সরকারপ্রধান ভার্চ্যুয়ালি পাঁচটি নবনির্মিত স্টেশন ও আউটপোস্ট উদ্বোধন করেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের আওতায় কোস্ট গার্ডের সদর দপ্তরসহ তিনটি জোন, ছয়টি জাহাজ ও সাতটি স্টেশনে নব সংযোজিত কৃত্রিম যোগাযোগ ব্যবস্থারও উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।

তিনটি জোন, ছয়টি জাহাজ ও সাতটি স্টেশনে নব সংযোজিত কৃত্রিম যোগাযোগ ব্যবস্থা। ছবি: এখন টিভি

এ সময় গভীর সমুদ্রে অবস্থানরত জাহাজ থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে নাবিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কোস্ট গার্ডকে সক্ষম করে গড়ে তুলছে সরকার।’

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের কোস্ট গার্ডকে আধুনিক ও শক্তিশালী করা লক্ষ্যে খুব শিগগিরই এ বাহিনীতে যুক্ত হতে যাচ্ছে উন্নত প্রযুক্তির জাহাজ ও আধুনিক মেরিটাইম সার্ভিলেন্স সিস্টেম। এরই মধ্যে নতুন দুটি জাহাজ ও হেলিকপ্টার যুক্ত হয়েছে। অচিরেই কোস্ট গার্ডকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। কেউই পিছিয়ে থাকবে না।’

উন্নত প্রযুক্তির জাহাজ। ছবি: এখন টিভি

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী, আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন জাহাজ সংযোজন  ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এ বাহিনী সক্ষমতা অর্জন করবে।'

প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই সমুদ্রসীমা অর্জিত হয়েছে। সুনীল অর্থনীতিকে কাজে লাগাতে সম্পদ আহরণ ও সমুদ্র গবেষণায় বড় জাহাজ যুক্ত হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, 'স্থলভাগে সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় আমাদের দেশের দৃষ্টি এখন সমুদ্র অঞ্চলের দিকে। সমুদ্রপথে আমাদের শতকরা ৯০ ভাগ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিচালিত হচ্ছে। সুনীল অর্থনীতির বিশাল ভাণ্ডার রয়েছে  এ বঙ্গোপসাগরে। এই সম্পদ অন্বেষণ, আহরণ ও সংরক্ষণ- এটা আমাদের দায়িত্ব। এ সমুদ্র সীমায় আমাদের যে বিশাল সম্পদ রয়েছে সেই সম্পদ যেন আমাদের অর্থনীতিতে কাজে লাগে সেজন্য আমরা ব্লু-ইকোনমি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। তাছাড়া সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি। কারণ গবেষণা একান্তভাবে দরকার।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ হতে পারে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধন। পর্যটনশিল্পের বিকাশ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে জোর দিতে হবে। ৮০ মাইল বালুকাময় সমুদ্র সৈকত আমাদের। এটাকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগিয়ে পর্যটন শিল্পকে আরও উন্নত করা দরকার।’

আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদনের আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে উপকূলীয় এলাকায় কোস্ট গার্ডের অর্জন নিয়ে আয়োজিত সাংস্কৃতিক পরিবেশনা 'জল তরঙ্গে অন্তরালে' উপভোগ করেন তিনি।


ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর