চাল, ডাল, তেল কিংবা পেঁয়াজ-চিনির পরে যে জিনিসটি মানুষের সবচেয়ে বেশি নিত্য প্রয়োজনীয় তা হলো ওষুধ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের তথ্যমতে, একজন রোগীর পেছনে যে টাকা ব্যয় হয়- তার ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ টাকাই ওষুধ কিনতে খরচ হয়। তাই ওষুধের দাম বাড়লেই সাধারণ মানুষ চাপে পড়ে যায়। গত দুই মাস ধরেই ওষুধের বাজারও চড়া।
ওষুধের দাম যখন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে, তখন অসহায় ক্রেতারা বলছেন, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এ যেন আরেক নাভিশ্বাস অবস্থা।
এক ক্রেতা বলেন, একটা ওষুধ মাসের ব্যবধানে ৪০ টাকা বেড়ে গেছে। তাহলে এই ওষুধ কিনবো কীভাবে?
গত বছরের মে মাসে শীর্ষ ছয়টি প্রতিষ্ঠানের ২৩৪টি জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
এক ওষুধ বিক্রেতা বলেন, প্রত্যেকটা ওষুধের দাম বেড়েছে। ওষুধ কিনতে যে মানুষের কষ্ট হয়, আমরাও বুঝি!
এছাড়া দোকানিরা বলছেন, এভাবে হঠাৎ দাম বাড়িয়ে দেয়ার কারণে প্রতিনিয়ত ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে তর্ক-বিতর্ক হয়।
দেশে বর্তমানে ২১০টি ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাদের উৎপন্ন ওষুধ দেশের মোট চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করে।
ইউনিমেড ইউনিহেলথ ফার্মাসিউটিক্যালসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ড. মো. আবু জাফর সাদেক বলেন, ১০০ টাকার ওষুধের মধ্যে ৩৭ টাকার কাঁচামালই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এছাড়া ডলারের দাম বৃদ্ধিসহ আরও নানা কারণে ওষুধের দাম বেড়েছে।
জানা গেছে, ১৯৯৪ সালের পর থেকে নতুন করে আর কোন ওষুধকে গেজেটভুক্ত করা হয়নি। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, ১১৭টি গেজেটভুক্ত ওষুধ ছাড়া বাকি ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণের খুব বেশি সুযোগ নেই তাদের।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুল আলম বলেন, ‘গেজেটভুক্ত ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বাকিগুলোর নিয়ন্ত্রণের সুযোগ কম।’
দেশে ওষুধের বাজার এখন প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার। বাংলাদেশের তৈরি ওষুধ ১৫৭টি দেশে রপ্তানি করা হয়। গত ৮ বছরে এ খাতে রপ্তানি আয় তিন গুণ বেড়ে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার হয়েছে।