সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও ভুটানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে ২০১৯ সালে ২২ জুলাই ১শ’ ৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে দুধকুমার নদীর ওপর সোনাহাট সড়ক সেতু'র নির্মাণ কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। প্রকল্প কাজ শেষ করার সয়মসীমা ছিলো ২০২১ সালের জুনে। তবে ৩ দফা সময় বাড়িয়ে ৫ বছরেও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ। এখন চলছে চতুর্থবারের মতো মেয়াদ বাড়ানোর প্রক্রিয়া। এরইমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এম বিল্ডার্স ও ন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড তুলে নিয়েছে ৩৯ কোটি টাকা।
এলাকাবাসী বলেন, 'কাজ অনেকদিন ধরে হচ্ছে কিন্তু প্রত্যাশিত অগ্রগতি নেই। কবে কাজ শেষ হবে তাও জানি না।'
সেতুটির কাজ শেষ না হওয়ায় পাশের শতবর্ষী জরাজীর্ণ রেলওয়ে সেতুটি দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলছে একমুখী চলাচল। এটি দিয়ে বন্ধ রয়েছে দশ টনের বেশি পণ্যবাহী গাড়ির পারাপার। সেইসঙ্গে চলাচলে চরম ভোগান্তি পূর্বপাড়ের ৭টি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের।
পথচারীরা বলেন, 'পুরাতন যে রেলের ব্রিজটা আছে এটা দিয়ে চলাচল এবং মালামাল বহন করা ঝুঁকিপূর্ণ।'
আরেকজন বলেন, 'এক থেকে দেড় ঘন্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে গাড়ি পারাপার হতে হয়।'
ব্যবসায়ীরা বলেন, ' ব্রিজ না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাথর বোঝাই ট্রাক পারাপার করতে সমস্যা হচ্ছে।'
সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে সোনাহাট স্থলবন্দরটি। এ বন্দর দিয়ে পাথর ও কয়লা আমদানি এবং রপ্তানি হচ্ছে তৈরি পোশাক, গার্মেন্টস ঝুট, প্লাস্টিক সামগ্রী ও সিনথেটিক নেট। তবে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় এ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানিতে আসছে না কাঙ্ক্ষিত গতি।
কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দরের সহকারি পরিচালক (ট্রাফিক) মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ' ব্রিজের কাজ শেষ না হওয়ায় স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি কম হচ্ছে। পাশাপাশি ইমিগ্রেশন সুবিধা চালু করা হলে বন্দরের গতি বাড়বে।'
সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হতে আরও ২ বছর লাগতে পারে, বলছে সড়ক বিভাগ।
কুড়িগ্রামের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, 'এখানে রেলওয়ের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জমি রয়েছে। এই জমি অধিগ্রহণের জন্য কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছে। আশা করছি শিগগিরই জমি অধিগ্রহণ শেষ হবে। সেক্ষেত্রে আগামী ২ বছরের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করতে পারবো।'
দেশের ১৮তম সোনাহাট স্থলবন্দরটি ২০১২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হলেও কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয় ২০১৪ সালে।