দেশে এখন

প্রেসকিপশনে ওষুধ লেখা নিয়ে চিকিৎসক-বিক্রয় প্রতিনিধি দ্বন্দ্ব

রোগীর ব্যবস্থাপত্রে নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ লিখা নিয়ে চিকিৎসক-বিক্রয় প্রতিনিধির দ্বন্দ্বের জেরে এক নারী চিকিৎসক হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিজ কর্মস্থল ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন ডাক্তার নুসরাত তারিন। তার অভিযোগ নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ রোগীর ব্যবস্থাপত্রে না লেখায় বিক্রয় প্রতিনিধি স্থানীয়দের সহায়তায় হামলা করেন। মাথায়, চোখ, ঠোটসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়েছেন।

ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন নুসরাত তারিন তন্বী বলেন, 'অনেক সময় বাকবিতণ্ডা হয়। আমাদের কলমে নিম্নমানের কোন ওষুধ লিখা অনৈতিক কাজ। স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে এতো বড় অন্যায় করে কেউ যদি সহজে সমাধান পেয়ে যায় তাহলে একটা ঘৃণিত দৃষ্টান্ত হবে।'

চিকিৎসকের ওপর চালানো ওই হামলার ঘটনা সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। ৩১ জানুয়ারি রাত ৯টা ১ মিনিটে ধারণ করা ফুটেজে দেখা যায়, ভুক্তভোগী ওই নারী চিকিৎসকের বাড়িতে কয়েকজন হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীদের আঘাতে আহত হন ডা. তন্বী, তার স্বামী ডা. মঞ্জুরুল ইসলাম ও মা মাছুমা খাতুন।

ডা. তন্বীর মা বলেন, 'আমি গেট থেকে বেড়িয়ে দেখি আমার জামাইকে তিনজন মিলে মারধর করছে। আর আমার মেয়েকেও তিনজন মিলে কিল-ঘুষি দিচ্ছে।'

তন্বীর স্বামী বলেন, 'একজন ডাক্তার হয়ে আমি যদি আমার স্ত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে নিজেকেই ব্যর্থ মন হয়।'

হামলার ঘটনায় অন্য চিকিৎসকরাও উদ্বিগ্ন। তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তাদের।

ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শেখ মোস্তফা খোকন বলেন, 'যদি চিকিৎসকরা নিরাপদ না থাকে তবে তারা মানুষকে চিকিৎসা দিতে আর অনুপ্রাণিত হবে না। এ ব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছি এবং হামলাকারীদের শাস্তি কামনা করছি।'

 তবে ভিন্ন কথা বলছেন ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধিদের সংগঠন ফারিয়া'র ডামুড্যা শাখার সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান। বলেন, 'ওষুধ লিখা বা বিক্রয় নিয়ে হট্টগোলের কথা মোটেও সত্য নয়। মূল বিষয় হচ্ছে উনার স্বামীর সাথে তাদের একটা দ্বন্দ্ব ছিলো।'

দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলম। বলেন, ব্যবস্থাপত্রে কেন তার কোম্পানির ওষুধ লিখেন না। এটাকে উদ্দেশ্য করেই এই দম্পতির গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন আছে। দ্রুতই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবো।'

এ ঘটনায় ডাক্তার তন্বীর স্বামী মঞ্জুরুল ইসলাম বাদী হয়ে ডামুড্যা থানায় মামলা করেছেন। ঘটনার ২৪ ঘন্টার আগেই অভিযুক্ত বিক্রয় প্রতিনিধি ও স্থানীয় একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর