তাই দক্ষ জনবল, উদার গণতন্ত্র চর্চা, সাম্য আর বৈষম্যের শ্রেণিভেদ মিটিয়ে স্বাধীনতার সুবাস রাজনীতি চর্চায় পৌঁছাতে হবে। তাহলে সেই সুবাস শিশুর হাসি ও মানুষের জীবনে পৌঁছাবে।
ডিসেম্বরের শীতের সকালে প্রথম যে ফুল ফোটে তা যেন বিজয়ের বরমালা। গোলাপের রঙও যেন পুরোপুরি লাল নয়, কিছুটা গাঢ় লোহিত। প্রতি ডিসেম্বরে সব ফুলই বিজয়ের উৎসবে নিজেদের শহীদের স্মরণে বিলিয়ে দেয়ার জন্যই ফোটে। যেমন একই প্রত্যয়ে মানুষ বিজয়ের গান গায়। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে সেই মুক্তি আর বিজয়ের প্রত্যয়ের ফুল কতটা সুবাস ছড়িয়েছে?
বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামান বলেন, 'আমরা সবচেয়ে সৌভাগ্যবান প্রজন্ম। আমরা যখন বিজয় লাভ করি তখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। আমি মনে করি, স্বাধীনতা শুধু মানচিত্র নয়, একটি মানুষ। আর মানুষকে নিয়েই স্বাধীনতা। মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তন হয়েছে কিনা?'
মাহবুব জামান আরও বলেন, 'আমার বড় দুঃখ হচ্ছে যে, রাজনীতি উধাও হয়ে গেছে। বাংলাদেশে প্রকৃতপক্ষে রাজনীতিবিদ নেই। রাজনীতি আসলে চর্চা করার বিষয়, কিন্তু সেটি দেখি না।'
অর্থনীতিবিদ কাজী খলিকুজ্জামান আহমেদ বলেন, ‘প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তন হয়েছে এবং কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যেমন, যাদের বাড়িঘর নেই তাদের ঘর দেয়া হয়েছে। চরাঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সবমিলিয়ে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য পরিকল্পিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।’
কাজী খলিকুজ্জামান আরও বলেন, 'প্রকল্প সঠিকভাবে করা হয়, কিন্তু বাস্তবায়নে অনেক ঘাটতি দেখা যায়। এটি আমাদের জন্য বড় অসুবিধা। তারপরও আমাদের অনেক অর্জন।'
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বড় অর্জন বলে মনে করেন মাহবুব জামান। তিনি বলেন, এই বিচারের মধ্য দিয়েই আমাদের বিজয়ের সুবাস ছড়িয়েছে। তবে বাংলাদেশে যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে এর আগে স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।
পৃথিবীতে অনেক জাতি আছে, যাদের বলার মতো দেশ নেই, ভূখণ্ড নেই, ঠিকানাহীন আর দাঁড়াবার জন্য মাথার ওপর পতাকাও নেই। কিন্তু কারো দানে নয়, আপনি-আমি অহংকার করতেই পারি, আমাদের একটি পতাকা, নিজের ভাষার গৌরব গাঁথুনি ও একটি স্বাধীন ভূখণ্ড আছে। আমরা পৃথিবীর যেকোন জায়গায় দাঁড়িয়ে বলতে পারি, আমি বাংলাদেশি।