দেশে এখন
0

উৎসবে রঙিন চট্টগ্রামের পাথরঘাটা গির্জা

চট্টগ্রামে নানা আয়োজনে পালিত গারো সম্প্রদায়ের ওয়ানগালা উৎসব। 'মিসি সালজং' বা শস্য দেবতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে নতুন ফসল খাওয়ার অনুমতি পেতে এই উৎসবের আয়োজন, যা ঘিরে উৎসবে রঙ্গিন হয় চট্টগ্রামের পাথরঘাটা গির্জা।

সাধারণত বর্ষার শেষে ও শীতের আগে, নতুন ফসল তোলার পর ওয়ানগালা উৎসবে মাতেন গারোরা। 'ওয়ানা' শব্দের অর্থ দেব-দেবীর দানের সামগ্রী আর 'গালা' শব্দের অর্থ উৎসর্গ করা। গারোদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব এটি।

ওয়ানগালা উৎসব আয়োজক সিস্টার জিতা রেমি বলেন, 'আমাদের আদি পিতা-মাতারা পুরো ডিসেম্বর মাসজুড়ে এটা পালন করতো। আমরা খ্রিষ্টান হয়ে আমাদের উপাসনার সাথে যুক্ত রেখে এ অনুষ্ঠান করি।'

উৎসবের শুরু হয় বর্নাঢ্য শোভাযাত্রায়, যেখানে উপাসনা সঙ্গীতের তালে তালে পুরোহিতের নেতৃত্বে এগিয়ে আসেন একদল ভক্ত। তাদের হাতে শোভা পায় নতুন বছরের ফসল ও ফলফলাদি। একে একে এসব খাদ্য উৎসর্গ করা হয় প্রভুকে। করা হয় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন।

গারোরা বিশ্বাস করে, সৃষ্টিকর্তা সব উদ্ভিদ ও শস্যাদির জীবনের ভার সূর্য দেবতা সালজংকে দিয়েছেন। আর তার করুণার ওপরও নির্ভর করে ফসলের ফলন। তাই সালজং দেবতার আশীর্বাদ পেতে গারদের এই ধন্যবাদ উৎসব।

গারোর জানান, আজ আমরা কীর্তন গেয়েছি, প্রার্থনা করেছি, বন্ধুদের সাথে দেখা হয়েছে। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও রয়েছে।'

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) নগরের পাথরঘাটা গির্জায় এই উৎসবে মাতেন গারোরা। সকাল ৯টা থেকে নানা বয়সীদের রঙিন সাজে মুখর হয় গির্জা প্রাঙ্গন। কেবল প্রার্থনা নয় ভোজ, নাচ, গান, আমোদ-প্রমোদ ও সম্মিলনের আকর্ষণে এই উৎসবে অংশ নেন অনেক বাঙালিও।

উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, 'অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত যে ফসল ওঠে, তা সৃষ্টিকর্তাকে উৎসর্গ না করে গারোরা খায় না। অনুষ্ঠানে আত্মীয় স্বজন সবাই আসে।'

প্রতি বছর দেশের নানা প্রান্তে খ্রিস্টান রীতিতে ওয়ানগালা বা নবান্ন উৎসব পালন করা হয়। এতে তাদের কৃষ্টিকে ধরে রাখার পাশাপাশি রক্ষা হয় সম্প্রীতিও।

আয়োজক পিটার মানকিন বলেন, 'আদিবাসী হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছি। আগের দিনগুলো স্মরণ করার জন্য এ অনুষ্ঠান করে থাকি।'

গারোরা ওয়ানগালা উৎসবের প্রথমদিনকে 'রুগালা', দ্বিতীয়দিনকে 'সাসাত স'আ' ও তৃতীয়দিনটিকে বলে 'ক্রাম গগাতা'।

 

এসএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর
No Article Found!