বাইরে থেকে এ স্টেশন দেখতে যতটা নান্দনিক, ভেতরটা ততটাই অভিজাত। ঝিনুক আকৃতির এই স্টেশন শুধু পর্যটননগরী কক্সবাজারকেই ধারণ করছে তা নয়, পর্যটকদের সব প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে এতে যোগ হয়েছে ১৭ ধরনের বাণিজ্যিক সুবিধা।
পর্যটকরা যাতে হোটেল ভাড়া ছাড়াই দিনে এসে দিনে সৈকত ঘুরে ফিরতে পারেন- এ জন্য ৬ তলা ভবনে আধুনিক তারকা হোটেল, লকার, পার্কিং, রেস্টরুম, শপিংমলসহ বহুমাত্রিক সুবিধা থাকবে। এটি নবনির্মিত ১০০ কিলোমিটার রেললাইনের শেষ প্রান্ত। ভবিষ্যতে যা ট্রান্সএশিয়ান রেলপথ এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের সঙ্গেও যুক্ত হবে।
দোহাজারি কক্সবাজার রেল প্রকল্পের পরিচালক সুবক্তগীন এখন টেলিভিশনকে জানান, আমরা এখানে লকার এবং ওয়াশরুম সুবিধা রেখেছি। একজন যাত্রী মাত্র ১৮৮ টাকা দিয়ে এখানে আসবেন, তারপর লকারে নিজেদের মালামাল রেখে সৈকত ঘুরে রাতের ট্রেনেই আবার ফিরতে পারবেন।
শনিবার (১১ নভেম্বর) এই প্রান্তে সুধী সমাবেশ থেকেই সগারপাড়কে সংযোগ করে গড়া এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এ পথে যাত্রী যাতায়াত শুরু হবে পয়লা ডিসেম্বর থেকে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবীর বলেন, আমরা আপাতত একটা ট্রেন চালু করবো, 'পর্যায়ক্রমে যাত্রী চাহিদা ও কোচের চাহিদা অনুযায়ী এটা বাড়বে। ভবিষ্যতে ট্রেনে ট্যুরিস্ট কোচ সংযোগেরও পরিকল্পনা আছে।'
রেলপথ উদ্বোধন করে সরকারপ্রধান ট্রেনে ভ্রমণ করবেন রামু স্টেশন পর্যন্ত। ১২ কিলোমিটার এ পথে দেখা যাবে সাগর-পাহাড়ের অপরূপ মিতালি। এখানকার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে শেখ হাসিনা যাবেন মাতারবাড়িতে। উদ্বোধন করবেন ১৫টি প্রকল্প।
এরমধ্যে রয়েছে ১২ মেগাওয়াটের মাতারবাড়ি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেল। এছাড়া বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভূমি ভরাট, বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প, বাঁকখালী নদীর উপর নির্মিত সেতু, সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে কুতুবদিয়া দ্বীপকে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্তি, উখিয়ায় বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প, রামু উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ আরো বেশ কিছু অবকাঠামোর ভিত্তি স্থাপন ও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করে আওয়ামী লীগ প্রধান যোগ দেবেন মহেশখালী আওয়ামী লীগের জনসভায়। কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, নির্বাচন সামনে রেখে এ জনসভা থেকে সরকারের ধারবাহিকতার কথাই বলবেন দলীয় প্রধান।
সব মিলিয়ে সাগর পাড়ের এই জনপদের প্রায় সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। আশা করা হচ্ছে এর মাধ্যমে এ অঞ্চলে যেমন পর্যটন বিকশিত হবে, তেমনি খুলে যাবে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনার দুয়ার।