বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। পাশাপাশি, এই হামলায় যে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততা রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে অবিলম্বে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, মঙ্গলবার সকাল থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে আধিপত্যবাদী ছাত্র অপরাজনীতি ফিরিয়ে আনা, শিক্ষার্থীদের মারধর এবং মাইক কেড়ে নেওয়ার অভিযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে প্রজ্ঞাপন জারির জন্য আন্দোলন শুরু করে। কিন্তু দুপুর তিনটার দিকে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন প্রতিহত করতে তাদের 'শিবির' আখ্যা দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় কুয়েট ছাত্রদল ও বহিরাগত বিএনপি নেতাকর্মীরা। এই হামলার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উঠে এসেছে। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভিসিসহ অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। ন্যাক্কারজনক এই হামলায় অর্ধশত শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হওয়ায় জাতীয় নাগরিক কমিটি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
আরো বলা হয়, আমরা মনে করি, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে যখন সকলের লক্ষ্য ঐক্যবদ্ধভাবে বৈষম্যহীন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ করা, শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে যখন সারা দেশে সংস্কার ও নতুনভাবে দেশ গঠনের কাজ চলছে, তখন কতিপয় ব্যক্তি ও গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিপক্ষ বানিয়ে বিভক্তকরণের আত্মঘাতী খেলায় মেতেছে। স্বাধীন মতপ্রকাশ ও নিরাপদ ক্যাম্পাস গঠনের অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও দুর্বৃত্ত লালনের পথ বেছে নিয়েছে তারা।
জাতীয় নাগরিক কমিটি মনে করে, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি থাকবে কি থাকবে না, তা নির্ধারণের সম্পূর্ণ অধিকার শিক্ষার্থীদের। লেজুড়বৃত্তি ছাত্র সংগঠনগুলোর অতীত কর্মকাণ্ড স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করে ভীতি সৃষ্টি করেছিল। নতুন করে সেই শূন্যস্থান যেন কেউ পূরণ করতে না পারে, সেব্যাপারে শিক্ষার্থীরা সোচ্চার রয়েছে। কিন্তু আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রদল ও বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা পরিস্থিতিকে অগ্নিগর্ভ করে তুলেছে। ফ্যাসিবাদী শক্তি উৎখাতে যারা আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নিয়েছে, তাদের ওপর এই হামলা স্পষ্টতই ছাত্র-নাগরিকদের স্বাধীনতার ওপর আঘাত এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অংশ।
আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মম আক্রমণ চালানো এবং বহিরাগতদের লেলিয়ে দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আহত করা ব্যক্তিদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। জাতীয় নাগরিক কমিটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের যে কোনো ন্যায্য আন্দোলন সমর্থন করবে এবং সকলকে এর পাশে থাকার আহ্বান জানায়।—সংবাদ বিজ্ঞপ্তি