ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ঝড় যেন থামছেই না। এবার পুরো বিশ্ব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা ইউএসএইডের প্রায় সব কর্মীকেই ছাঁটাইয়ের নির্দেশ দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এতে করে, বন্ধ হতে চলেছে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ৬ দশকের লড়াই।
ইতোমধ্যেই কয়েকহাজার কর্মীকে ইমেইলের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে নতুন নির্দেশনা। যা কার্যকর হবে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে। কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিসের তথ্য বলছে, ইউএসএইডে কর্মরত রয়েছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। যার দুই-তৃতীয়াংশই কর্মসূত্রে বিদেশে অবস্থান করছেন। মূলত মার্কিন দক্ষতা বিষয়ক দপ্তরের দায়িত্ব পাওয়ার পরই ইউএসএইডকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অভিহিত করেন ইলন মাস্ক। তার দাবি, প্রতিবছর মার্কিনদের ৭ হাজার ২শ কোটি ডলারের মাধ্যমে সংস্থাটি বামপন্থিদের অর্থায়ন করছে।
ইউএসএইডের পাশাপাশি কপাল পুড়লো জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কাউন্সিল- ইউএনএইচআরসির। মঙ্গলবার সংস্থাটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহার করতে নির্বাহী আদেশে সই করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক সংস্থা 'ইউএনআরডব্লিউএ' তে তহবিল বন্ধের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। তবে নির্বাহী আদেশে বিস্ফোরণ হিসেবে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতিসংঘে থাকার যৌক্তিকতা যাচাইয়ের নির্দেশনা।
ট্রাম্প জানান, সংস্থা হিসেবে জাতিসংঘের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও এটি পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থের ওপর নির্ভরশীল। বাকি দেশগুলো জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের অনুপাতে কম অর্থ প্রদান করছে। যা পরিহার করা প্রয়োজন। তবে ওয়াশিংটনের তহবিল বন্ধের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার কয়েক লাখ নারীর জীবন শঙ্কার মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা জাতিসংঘ কর্তাদের।
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ইউএনএফপিএ আঞ্চলিক পরিচালক পিও স্মিথ বলেন, ‘মানবিক কাজের জন্য যুক্তরাষ্ট্র পুরো বিশ্বে সবচেয়ে বেশি অর্থায়ন করছে। তাই এই অর্থায়ন বন্ধের সিদ্ধান্তে আমরা শঙ্কার মুখে আছি। এতে করে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কয়েক লাখ শিশু ও নারী জীবনও শঙ্কার মুখে পড়তে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘জাতিসংঘের বেশিরভাগ তহবিলই যুক্তরাষ্ট্র প্রদান করে। যদিও এতে সবারই আনুপাতিক অংশগ্রহণ থাকা প্রয়োজন ছিল। যদি এটি করা সম্ভব হয়, মাত্র ১০ মিনিটেই জাতিসংঘ তার কার্যকারিতা দেখাতে পারবে। যা পার্থক্য গড়ে দিবে।’
এছাড়াও নির্বাহী আদেশ জারির মাধ্যমে মার্কিন শিক্ষা দপ্তর বন্ধের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। জানান, শিক্ষার পেছনে বিপুল বিনিয়োগের পরেও বিশ্বজুড়ে মার্কিনদের অবস্থান তলানিতে। তাই নির্দেশনাটি কার্যকরের জন্য কংগ্রেসের সহায়তা চেয়েছেন তিনি।