চাকচিক্য-বিলাসিতার শহর যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস এখন যেন কেবলই ধুধু মরুভূমি। দুনিয়া কাঁপানো হলিউড তারকাদের বুকেও ভিটা হারানোর শোক। পর্দার করুণ দৃশ্যটা আজ বাস্তব। তবে ঠিক কী কারণে এমন ভয়াল পরিণতি তা এখনও অজানা।
দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জ্বলছে লস অ্যাঞ্জেলসের বনাঞ্চল, আগুন ছড়িয়ে পড়েছে লোকান্তরে। দাবানল নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের দমকল বিভাগ। আগুনের পরিধি কমাতে আকাশ থেকে ছিটানো হচ্ছে লাল-গোলাপি রঙের এক ধরনের পাউডার। যা ফস-চেক নামে পরিচিত। ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া আগুন প্রতিরোধের অন্যতম উপায় এটি।
তবে এই ফস-চেক ব্যবহারে পরিবেশগত প্রভাবের কারণে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক, প্রশ্নবিদ্ধ এর কার্যকারিতা নিয়েও। কিন্তু কেন? আদৌ এটি ক্যালিফোর্নিয়ার আগুন দমাতে কতটা সক্ষম?
ফস-চেক মূলত আগুনের চারপাশে স্প্রে করা, যা আগুনের গতি প্রবাহ বন্ধ করতে পারে। যার মধ্যে ৮০ শতাংশ পানি, ১৪ শতাংশ সার জাতীয় লবণ এবং ৬ শতাংশ প্রতিরোধী উপাদান।
মূলত ১৯৬৩ সাল থেকে মার্কিনরা দাবানলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা ব্যবহার করছে। পদার্থটি দীর্ঘমেয়াদী অগ্নি প্রতিরোধক, যা ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অফ ফরেস্ট্রি অ্যান্ড ফায়ার প্রোটেকশনের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়।
তবে এ পদ্ধতি বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক ব্যবহৃত হলেও, লস অ্যাঞ্জেলেসে এটির ব্যবহার নিয়ে চলছে বাদানুবাদ। অভিযোগের আঙুল তুলছেন দেশটির সাবেক বন পরিষেবা কর্মীরা। তাদের দাবি এটির রাসায়নিক গুনাগুণ খুবই কম। যা এমন দাবানল মোকাবিলায় মোটেও কার্যকরী নয়। উল্টো সমালোচকদের দাবি, এটি পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আবার এটির প্রভাবে জলাশয়ের মাছ মরে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।
তবে, বন কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলেও, পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা - ইপিএ থেকে বাধ্যতামূলক অনুমতি নিতে হবে। অন্যদিকে আগুনের বিস্তার কমাতে হাজার হাজার গ্যালন ফস-চেক মোতায়েন করেছে মার্কিন সরকার। এয়ার ট্যাঙ্কার থেকে ছিটানো পদার্থটি লস অ্যাঞ্জেলেস শহরতলীর ছাদ, যানবাহন এবং সড়কে জমে থাকতে দেখা যায়।
লস অ্যাঞ্জেলেস এবং আশেপাশের এলাকায় চারটি দাবানলে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি একর জায়গা পুড়ে ছাই। নজিরবিহীন এ আগুনে প্রাণহানির সংখ্যা ৩০ এর কাছাকাছি। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।