বিতর্কের সমার্থক হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শব্দগুচ্ছকে যোগ করা এখন শুধুই সময়ের ব্যবধান মাত্র। নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাবেক প্রেসিডেন্টের বিতর্কিত মন্তব্য।
শুধু দ্বিতীয় মেয়াদেই নয়, তৃতীয়বারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মসনদে বসতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন মুল্লুকে প্রেসিডেন্টের সর্বোচ্চ মেয়াদ দুইবার হলেও সেটিতে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা ফুটে উঠেছে রিপাবলিকান প্রার্থীর বক্তব্যে। নেভাডায় এক নির্বাচনী সভায় ট্রাম্প বলেন, দেশ ও জাতির স্বার্থে তৃতীয় মেয়াদেও যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত তিনি।
রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘তৃতীয়বারও আমরা ক্ষমতায় আসবো। যদি একসাথে কাজ করি, তাহলেই এটি সম্ভব। শুধু আমার জন্য নয়, আমাদের সবার জন্য এটি প্রয়োজন। আমেরিকার রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে ভালো উপলক্ষ্য হবে বিষয়টি।’
স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে প্রতিদ্বন্দ্বীকে বাক্যবাণে বিদ্ধ করতেও ভোলেননি ট্রাম্প। অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা বাড়াতে সহায়তা করেছেন কামালা।
প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের উন্মুক্ত সীমানার মাধ্যমে কামালা দেশে মানব ও শিশু পাচারকারী, মাদক চোরাকারবারি ও রক্তপিপাসু অপরাধীদের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন। তার চেয়ে খারাপ কেউ হতে পারেন না।’
নির্বাচনে জয় পেলে শত্রুর তালিকা নিয়ে ওভাল অফিসে বসবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অ্যারিজোনায় নির্বাচনী সভায় এমন অভিযোগ করেছেন কামালা হ্যারিস। ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর দাবি, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ট্রাম্পের মধ্যে প্রতিশোধ পরায়ণতা রয়েছে। তাই রিপাবলিকান প্রার্থী জয়ী হলে বিশেষ স্বাস্থ্যনীতি ওবামা কেয়ার বাতিল করবেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন কামালা।
ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কামালা হ্যারিস বলেন, ‘ওবামা কেয়ার নামে পরিচিত স্বাস্থ্যনীতি বাতিল করতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প। কংগ্রেসের স্পিকার তার বন্ধু। যিনি সম্প্রতি বলেছেন ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলে ওবামা কেয়ার থাকবে না। এমন কাজ করলে কোটি কোটি মার্কিন স্বাস্থ্য বিমার বাইরে চলে যাবেন।’
মধ্যবিত্তদের জন্য বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে কামালা জানান, দায়িত্ব নেয়ার পর জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে আনা তার মূল লক্ষ্য।
কামালা হ্যারিস বলেন, ‘জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে আনা আমার প্রধান লক্ষ্য। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে প্রতিদিন এ লক্ষ্যে আমি কাজ করবো। ১০ কোটি মধ্যবিত্তকে বিশেষ কর ছাড়ের আওতায় আনবো। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি বন্ধে প্রথমবারের মতো আইন প্রণয়ন করবো।’
নির্বাচনে হেরে যাবার ভয় জেকে বসেছে ট্রাম্পের মনে। তাই বিতর্কিত মন্তব্যের মাধ্যমে আলোচনায় থাকার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। বিশ্লেষকদের ধারণা, ট্রাম্পের মানসিক অবস্থা ঠিক নেই, বিষয়টি প্রমাণে যথেষ্ট তার উত্তেজিত বক্তব্য।
ব্রুকিংস ইন্সটিটিউট জ্যেষ্ঠ পরিচালক এলাইন কার্মাক বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে তিনি হেরে যাবার ভয় পাচ্ছেন। তিনি জেলে যেতে ভয় পাচ্ছেন। তাই মানুষকে কীভাবে আকৃষ্ট করা যায়, সে দিকে ঝুঁকছেন ট্রাম্প। যেটি হলো বিতর্কিত বক্তৃতার মাধ্যমে বিভেদ তৈরি করা। এতে নির্বাচনী সভায় আরো জনসমাগম বাড়ছে।’
পহেলা নভেম্বর নেভাডায় শেষ হচ্ছে আগাম ভোট। অন্যদিকে ওহাইয়োতে চলছে আগাম ভোটের ব্যালট গণনা।