প্রতিবছর একবার মার্কিন আইনসভা কংগ্রেসে ভাষণ দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট, যা পরিচিত স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন নামে। এ ভাষণে গেলো বছরের সাফল্য, ব্যর্থতা ও চলতি বছরের কর্মসূচি দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। নির্বাচনের আগে শেষবারের মতো বাইডেনের জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ হওয়ায় এবারের স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ছিলো গুরুত্বপূর্ণ।
গাজায় গণহত্যা বন্ধে ব্যর্থ হওয়ায় বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে ছিলেন জো বাইডেন। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কংগ্রেসে জানান, আজীবন ইসরাইলের সমর্থক ছিলেন তিনি। যুদ্ধের জন্য হামাসকে দায়ী করে বাইডেন বলেন জিম্মিদের সাধারণ মানুষের মাঝে লুকিয়ে কাপুরুষের মতো কাজ করছে হামাস।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক বিপর্যয় বাড়ছে প্রতি মুহূর্তে। বুলেট, বোমার পাশাপাশি গাজাবাসীর জন্য বড় ঘাতক হিসেবে দাড়িয়েছে ক্ষুধা। সংকট সমাধানে গাজার উপকূলে ত্রাণ সরবরাহের জন্য অস্থায়ী সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ঘোষণা দেন জো বাইডেন। জানান, মানবিক সহায়তা দরদামের বিষয় হতে পারে না। একইসঙ্গে উল্লেখ করেন ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি ফেরাতে দুই রাষ্ট্র সমাধানের কোন বিকল্প নেই।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, 'মানবিক সহায়তা গৌণ বিষয় বা দর দামের বিষয় হতে পারে না। নিরাপরাধের জীবন রক্ষা ও বাঁচানোর বিষয়কে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান।'
আর মাত্র ৮ মাস পরেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। বাইডেনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই নাম উল্লেখ না করেও রিপাবলিকান দলের এ নেতাকে কথার তীর্যক বানে বিদ্ধ করেছেন বাইডেন।
বাইডেন আরও বলেন, 'যদি আমার পূর্বসুরী ভাষণটি দেখে থাকেন, নোংরা রাজনীতির মাধ্যমে কংগ্রেস সদস্যদের চাপ প্রয়োগ করে বিল আটকে দেয়ার খেলা বন্ধ করুন। এর বদলে দেশের স্বার্থে একসঙ্গে বিল পাস করার কাজ করুন।'
৩ বছরে ইউক্রেন যুদ্ধ গড়ালেও যুদ্ধের কার্যত নিয়ন্ত্রণ এখন রাশিয়ার হাতে। একের পর এক অঞ্চল দখল করছে রুশ বাহিনী। অন্যদিকে সমরাস্ত্রের সংকটে বেকায়দায় জেলেনস্কি প্রশাসন। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আশ্বস্ত করেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের সঙ্গ ছাড়বে না যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, 'পুতিনের জন্য আমার একটি সোজা বার্তা থাকবে যে আমরা ইউক্রেনকে একা ছেড়ে যাবো না। আমরা মাথা নত করবো না, আমি মাথা নত করবো না।'
রাশিয়ার পাশাপাশি চীনকেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। জানান, যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা চায়, সংঘাত নয়। স্টেট অব ইউনিয়ন ভাষণের আগে গাজায় যুদ্ধবিরতি চেয়ে প্রেসিডেন্টের পথ আটকে রাখেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী।