ডাক্তার, এবার তোমার পালা। ২০১১ সালে সিরিয়ার দেরা শহরে এই গ্রাফিতিই নাড়িয়ে দেয় বাশার আল আসাদের ভিত। ১৩ বছর পর পতন হয়েছে কুখ্যাত এই স্বৈরশাসকের। যার ১৯ দিন পেরিয়ে গেলেও উৎসব চলছে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় শহরটিতে।
প্রকৃতির বিচারেই দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট। এমনটাই মনে করছেন সাধারণ সিরিয়ানরা। আসাদ পরিবারের শাসন থেকে মুক্ত হবার মাধ্যমে ৫৩ বছর পর উপভোগ করা হচ্ছে প্রকৃত স্বাধীনতা। যার মাধ্যম হিসেবে চলছে উদযাপন। এসময় দেশ পুনর্গঠনে কাজ করার কথা জানিয়েছেন জনগণ।
এক কারাবন্দি বলেন, ‘৫ বছর আমি কারাবন্দি ছিলাম। মাথা উঁচু করে তাকাতেও পারিনি। হত্যা, রক্ত, ক্ষুধা কিংবা পালিয়ে বেড়ানো, সবই দেখতে হয়েছে। আল্লাহর রহমতে কঠিন এই পর্যায় পার করে এসেছি।’
আরেক নাগরিক বলেন, ‘এতদিন খুনি সরকার আমাদের দেশ পরিচালনা করছিল। প্রথমবারের মতো আমরা প্রকৃত স্বাধীনতা উপভোগ করছি।’
আসাদ পতনের পর প্রথমবারের মতো সাময়িক কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করেছে খালেদ ব্রিগেড। রাজধানী দামেস্কে বিশেষ ব্রিগেডের কয়েক হাজার এইচটিএস যোদ্ধাকে স্বাগত জানায় সাধারণ মানুষ। দেশের সুরক্ষা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় কাজ করে যাবার কথা পুনর্ব্যক্ত করে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।
সশস্ত্র গোষ্ঠীটির একজন বলেন, ‘আমাদের দেশে কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িকতার স্থান নেই। যেহেতু আমরা দেশের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছি। আশা করি কোনো সমস্যা হবে না।’
শহরের এক নাগরিক বলেন, ‘সুন্দর কুচকাওয়াজ হয়েছে। কিছুদিন ধরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলাম। তবে তারা সড়কে চলে আসায় আমরা সুরক্ষিত অনুভব করছি।’
বৈরুত হয়ে দুবাইয়ে পালিয়েছেন বাশার আল আসাদের চাচা রিফাত আল আসাদ। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন লেবাননের ২ কর্মকর্তা। ইন্টারপোল থেকে গ্রেপ্তারের অনুরোধ না আসায় রিফাতকে দুবাইয়ে যাবার অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে জানান তারা। ১৯৮২ সালে হামা শহরে ৪০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যার অভিযোগে রিফাতের বিরুদ্ধে বিচার চলছিল সুইজারল্যান্ডের আদালতে। হামার কসাই নামে পরিচিত ছিলেন তিনি।
নতুন সিরিয়ায় নাগরিকদের পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাপাবে তুরস্ক। দামেস্কের নতুন সরকারের প্রতি সমর্থনের অংশ হিসেবে এই সহায়তা দিতে যাচ্ছে আঙ্কারা।
গেল ১৯ দিনে তুরস্ক ছেড়ে নিজ দেশে ফিরে গেছেন প্রায় ৩১ হাজার সিরিয়ান। সাম্প্রতিক জরিপ বলছে, সিরিয়ায় ফিরে যেতে আগ্রহী ৭০ শতাংশ শরণার্থী। ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধে সিরিয়া ছেড়ে তুরস্কের আশ্রয় নেন ৩০ লাখের বেশি মানুষ। এছাড়াও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া প্রতিবেশী রাষ্ট্রে বিদ্যুৎ সরবরাহের পাশাপাশি জ্বালানি খাত পুনর্গঠনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এরদোয়ান সরকার।