এভিয়েশন খাতের ইতিহাসে সবচেয়ে রহস্যময় ঘটনার একটি ‘এম এইচ থ্রি সেভেন জিরো’ দুর্ঘটনা। ভুক্তভোগীদের এখনও তাড়িয়ে বেড়ায় এই ট্র্যাজেডি। ১০ বছর পরও প্রিয়জনের কোনো হদিস না পাওয়া পরিবারগুলোর দাবি, ইচ্ছা করেই সরকার সত্য গোপণ করছে। এটা হত্যাকাণ্ড, নাকি পাইলটের আত্মহত্যা, সরকার নিজেই এখনও নিশ্চিত নয়, কি হয়েছিলো সেদিন।
বলছি, মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের এম এইচ থ্রি সেভেন জিরো ফ্লাইটটির কথা। ২০১৪ সালের ৮ মার্চ কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাওয়ার মাঝপথে হঠাৎ করেই আকাশ থেকে হারিয়ে যায় বোয়িং সেভেন সেভেন মডেলের উড়োজাহাজটি। এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বিমানটির কোনো খোঁজ। ২৩৯ জন যাত্রী ও ক্রুসহ বিমানটি যেন হঠাৎ করেই হারিয়ে যায় পৃথিবী থেকে।
এরপর থেকে বহুবার খোঁজ করেও বারবারই ব্যর্থ হয়েছে সরকার। ২০১৮ সালে সবশেষ খোঁজ করা হয়েছিলো বিমানটি। আবারও এই উড়োজাহাজ খোঁজা শুরু করতে যাচ্ছে মালয়েশিয়ার সরকার। দেশটির যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, টেক্সাসের কোম্পানি ওশান ইনফিনিটির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে এই বিমানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করার।
আশাবাদী মালয়েশীয় সরকার বলছে, ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেলে দেয়া হবে পরিবারের কাছে। কিছুই খুঁজে না পাওয়া গেলে ওশান ইনফিনিটিকে দেয়া হবে না কোনো অর্থ। ২০২৫ সাল থেকে পুনরায় শুরু হবে এম এইচ থ্রি সেভেন জিরো বিমানের খোঁজ।
কুয়ালালামপুর থেকে উড্ডয়নের এক ঘণ্টা পরই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বিমানটির। রাডারে দেখা যায় উড়োজাহাজটি বারবার গতিপথ পরিবর্তন করছিলো, একসময় রাডার থেকেও হারিয়ে যায় বিমানটি। সবশেষ আন্দামান সাগরের ওপরে অবস্থান করছিলো বিমানটি।
অনুসন্ধানকারীরা বলছেন, ভারত মহাসাগরের দক্ষিণেই বিধ্বস্ত হয়েছে বিমানটি। নিখোঁজের কয়েক বছর পর ভারত মহাসাগরে পাওয়া যায় কিছু ধ্বংসাবশেষ। নতুন করে শুরু হতে যাওয়া অভিযানে এবার ভারত মহাসাগরের ১৫ হাজার স্কয়ার কিলোমিটার এলাকা দখল করা হবে।
ভারত মহাসাগরের দক্ষিণের ১ লাখ ২০ হাজার স্কয়ার কিলোমিটার এলাকায় যৌথভাবে অনুসন্ধান চালায় মালয়েশিয়া, চীন আর অস্ট্রেলিয়া। ২০১৮ সালের অনুসন্ধানে ধরা পরে, বিমানটির গতিপথ পরিবর্তনের অনেক চেষ্টা করা হয়েছিলো, এর পেছনে কে, সেই তথ্য পাওয়া যায়নি।
বিভিন্ন সময়ে সামরিক বিশ্লেষকদের করা গবেষণা থেকে জানা যায়, আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বৈমানিক। এমনকি বিমানটিকে ভিনদেশি সামরিক বাহিনী ভূপাতিত করেছে, এমন তত্ত্বও রয়েছে।