৪৫ বর্গ কিলোমিটারের উপত্যকা রক্ত আর কংক্রিটের জঞ্জালে পূর্ণ। প্রায় ৮ মাসের হামাস-ইসরাইল যুদ্ধে গাজার সংক্ষিপ্ত বিবরণ এটি। বিশ্ব যখন যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিচ্ছিলো ইসরাইলকে, সে সময় দখলদার রাষ্ট্রটির সবচেয়ে বড় মিত্রের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় যুক্তরাষ্ট্র। এবার গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে ইসরাইলের হয়ে প্রস্তাব ঘোষণা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলনে ইসরাইলের পক্ষে ৩ ধাপের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব তুলে ধরেন জো বাইডেন। ১ম ধাপে ৬ সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিতে শুধুমাত্র জনবহুল এলাকা থেকে সরিয়ে নেয়া হবে ইসরাইলি সেনা। নির্দিষ্ট সংখ্যক জিম্মিকে মুক্তির বিনিময়ে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে ফিলিস্তিনি কারাবন্দিদের।
২য় ধাপে উপত্যকা থেকে সম্পূর্ণরূপে সেনা প্রত্যাহার করবে ইসরাইল। বিনিময়ে সব ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দিবে হামাস। যুদ্ধবিরতিকে পরিণত করা হবে স্থায়ীভাবে শত্রুতা বন্ধের মাধ্যম হিসেবে। শেষ ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে গাজা পুনর্গঠন প্রক্রিয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘নতুন পর্ব শুরুর সময় এসেছে। জিম্মিরা বাড়ি ফিরছে। ইসরাইলের নিরাপত্তার জন্য দুর্ভোগ কমানোর স্বার্থে যুদ্ধ শেষ করার সময় এসেছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, হামাস দুর্বল হয়ে পড়ায় মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য দেয়া হয়েছে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব। তবে এর আগেও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করায় এবারও তা কার্যকর হবে কি-না তা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বারবারই বলে আসছেন লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবে তার দেশ। বিশ্লেষকদের দাবি, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ইমেজ রক্ষার্থে ইসরাইলের পক্ষে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন জো বাইডেন।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে হামাসের পক্ষে ৭ অক্টোবরের মতো হামলা করা সম্ভব নয়। এটি ইসরাইলের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল এবং আমার মতে লক্ষটি যুক্তিসঙ্গত।’
সংবাদমাধ্যম দ্য হিলের সহ সম্পাদক বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন কেনো প্রস্তাব দিচ্ছেন? জনসম্মুখে ইসরাইল কেনো প্রস্তাব দিচ্ছে না? বিষয়টি আমাকে দ্বিধায় ফেলছে। রাজনৈতিক স্বার্থে প্রাণহানি বন্ধে বাইডেনের কিছু করা প্রয়োজন ছিলো। কারণ তাকে বড় ডেমোক্রেট সমর্থকদের আস্থা জয় করতে হবে।’
তবে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে হামাস।