স্বাস্থ্য
0

শেরপুরে দুই শতাধিক প্রসূতি নারীর পুষ্টি ভাতা বন্ধ

শেরপুরে অজানা কারণে বন্ধ দুই শতাধিক প্রসূতি নারীদের পুষ্টি ভাতা। এজন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক, পৌরসভাসহ বিভিন্ন দপ্তরে মাসের পর মাস ঘুরেও মিলছে না প্রতিকার। এমনকি ভাতা বন্ধের কারণও বলতে পারছে না কেউ। একে অপরকে দুষছে সংশ্লিষ্টরা।

শেরপুর পৌরসভার কসবা কাঠগড় মহল্লার বাসিন্দা কুসুম বেগম। স্বামী পেশায় রাজমিস্ত্রি হলেও বছরের বেশিরভাগ সময়ে থাকে না কাজ। এমন অবস্থায় তার কন্যা শিশুর পুষ্টি চাহিদা মেটাতে গেল ২০২০-২১ অর্থবছরে আবেদন করেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতাধীন তিন বছর মেয়াদের ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা কর্মসূচির জন্য। অবশেষে চূড়ান্ত তালিকায় তার নাম থাকলেও অজানা কারণে এক বছর পরই বন্ধ হয়ে যায় ভাতা।

তিনি বলেন, 'তিনবার টাকা তুলেছি এক বছরে, পরে তুলতে গিয়েছি তখন আর টাকা দেয়নি।'

শুধু কুসুম নয়, একই গল্প শেরপুর পৌর এলাকার ১ হাজার ১শ' নারীর। ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে ভাতার জন্য বাছাই করা হয় তাদের। কথা ছিল প্রতি তিন মাস পর পর নির্ধারিত ব্যাংক থেকে তাদের দেয়া হবে ২ হাজার ৪শ' টাকা। টানা তিন বছর এই ভাতা দেয়ার কথা থাকলেও কেউ কেউ ভাতা পেয়েছে এক বছর, কেউ আবার পেয়েছে ১৫ মাস।

আরেকজন নারী বলেন, 'আমাদের কোনো কাগজপত্র দেয়নি একটা অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়েছে সেখানে কয়েকবার টাকা আসছিল এরপর আর আসেনি। এখন কাগজপত্র নাই কার কাছে ঘুরবো।'

এরপর ২০২২ সাল থেকে অদৃশ্য কারণে বন্ধ হয়ে যায় এই কার্যক্রম। এতে বিপাকে পড়েন সুবিধাভোগীরা। এ বিষয়ে ব্যাংক, পৌরসভা ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার ঘুরেও মেলেনি কোন প্রতিকার।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, ঠিক কি কারণে ভাতার টাকার বন্ধ রয়েছে তা বলতে পারবে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর।

এই বিষয়ে শেরপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন বলেন, 'আমরা তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। কেন বন্ধ হয়েছে তারাই বলতে পারবে।'

আর এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা।

শেরপুর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. লুৎফুল কবীর মুঠোফোনে বলেন, 'ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।'

মায়ের স্বাস্থ্য এবং শিশুর পুষ্টি সেবা নিশ্চিতে এই কর্মসূচির আওতায় থাকা নারীদের ৩৬ মাসে ২৮হাজার ৮শ' টাকা করে দেওয়ার কথা। তবে হঠাৎ করে এই সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। এমন অবস্থায় আবারও এই কর্মসূচি চালুর দাবি জানান তারা।

ইএ