নড়াইলের লোহাগড়ার গাছবাড়িয়া গ্রামের বর্গাচাষি তাপস বিশ্বাস। এক একর জমিতে আবাদ করেছিলেন পাট। আগে পাট বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করলেও বাড়ির কাজে ব্যবহার হতো পাটকাঠি। তবে এখন পাটের পাশাপাশি কাঠি বিক্রি করে সচ্ছলতা ফিরেছে তার সংসারে, আয় করছেন বাড়তি টাকা।
শুধু তাপস বিশ্বাস নয়, পাটকাঠি বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন জেলার হাজারো কৃষক। উৎপাদিত এসব পাটকাঠি ভাগ করা হয় দুটি শ্রেণিতে। শুকনা মৌসুমে প্রান্তিক কৃষকদের সেই পাটকাঠি ব্যবসায়ীরা বাড়ি থেকে নগদ টাকায় কিনে নিয়ে যান। নড়াইল থেকে ব্যবসায়ীরা পাটকাঠি কিনে খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, সাতক্ষীরা, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, চিটাগাংসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করেন।
পাটকাঠি নিয়ে কর্মরত বর্গাচাষি তাপস বিশ্বাস
গত কয়েক বছর ধরে পাটকাঠি বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে পাটকাঠির চাহিদা বেড়েছে। বর্তমানে কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত পাটকাঠি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার না করে ভালো দামে বিক্রি করছেন। এতে জেলার কৃষকেরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।
নড়াইলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আশেক পারভেজ বলেন, ‘ বর্তমানে পাটের যে কাঠি রয়েছে তা অনেক মূল্যবান হয়েছে। যেহেতু এটি পরিবেশবান্ধব তাই এটি শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। চাহিদা থাকায় কৃষকরা এর মাধ্যমে স্বাবলম্বী হচ্ছে। আশা করছি দিনে দিনে পাটকাঠি বহুমুখী ব্যবহার আরো বাড়বে। আর কৃষকদের বাজার বৃদ্ধির পাশাপাশি এর ভালো দাম পাবে।’
চলতি বছর জেলায় পাটের আবাদ হয়েছিল ২৩ হাজার ৪শ ৩০ হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদিত পাট থেকে পাটকাঠির পরিমাণ এক লক্ষ চল্লিশ হাজার ৯৮৫ মেট্রিক টন। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় একশত পঁয়ত্রিশ কোটি টাকা। চলতি বছরে নড়াইল থেকে শত কোটি টাকার পাটকাঠি কেনাবেচার আশা রয়েছে।