ব্যাংকপাড়া
অর্থনীতি
0

১৫ বছরে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিএবির নামে ১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ

গত ১৫ বছরে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) নামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। আর এর পিছনে প্রধান হাত ছিল সংগঠনটির এবং এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের। যিনি কিনা ১৭ বছর ধরে সংগঠনটি দখল করে ছিলেন। আর তাই ব্যাংকগুলোকে দুর্দশা থেকে ফিরিয়ে আনতে নতুন দায়িত্ব নিয়েছে বিএবির।

বিগত ১৫ বছরে ব্যাংকের দুই ডজন জালিয়াতির মাধ্যমে অন্তত ৯২ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। দীর্ঘদিনের অনিয়মের কারণেই ব্যাংক ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে গেছে। গত ১৫ বছরে গর্ভনর ছিলেন যারা তারা বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে অনেক নিয়ম মানা হয়নি। এতে করে তৃতীয় ও চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকগুলো ধসে গেছে। ফলে এখন তারল্যে সংকটে ভুগছে ব্যাংকগুলো।

১৭ বছরে এককভাবে সংগঠনটির সভাপতির পদ দখল করে ছিলেন এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। শুধু পদ দখল নয়, করেছেন সংগঠনের নামে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ। 

এমন অবস্থায় গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ব্যাংকগুলোর পর্ষদ পুনর্গঠন করতে শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দায়িত্ব পাওয়া সেই নতুন পরিচালকদের নিয়ে বৈঠকে বসে বিএবি। এতে ১৭ বছর পর নতুন সভাপতি পেয়েছে সংগঠনটি। সোমবার সংগঠনটির বৈঠকে এ দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়। 

বিএবির নতুন সভাপতি হয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যাংক এশিয়ার রোমো রউফ চৌধুরী এবং ফার্সট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তারা।

নতুন ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান জানান, আগামী জানুয়ারির মধ্যে ব্যাংক খাতের এই দুর্দশা কেটে যাবে। সেজন্য এ বছরের চার মাস বিএবির সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।

ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, ‘জানুয়ারিতে কোনো দুর্দশা চিত্র নিয়ে আমরা বিএবিতে হাজির হবো না। এই চার মাস বিএবির সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। এইসময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সব স্টেক হোল্ডারদের সাথে আমাদের যোগাযোগ থাকবে।’ 

অপরদিকে আগের কমিটি মৌলিক কোনো কাজ করেনি। শুধু বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে তহবিল সংগ্রহ করেছে বলে জানিয়েছেন নতুন চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার। 

নতুন চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে গত ১৫ বছরে আমাদের কোনো কাজই হয় নাই এখানে। আমরা যারা নতুন এখন দায়িত্ব নিয়েছি তাদের কাজ জায়ান্ট। এখানে এখন অনেক কাজ করতে হবে।’’ 

অপরদিকে সংগঠনের নামে ব্যাংকগুলো থেকে যে অর্থ ছয়-নয় করা হয়েছে এবং যারা করেছে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানায় বিএবির নতুন কমিটি।

ইএ