সাংবাদিককে পা ভাঙার হুমকি; বিএনপি নেতার ভাষ্য, ‘রাগে বলে ফেলেছি’

সাংবাদিক শিহাব খান (বামে), বিএনপি নেতা মো. নুরে আলম (ডানে)
সাংবাদিক শিহাব খান (বামে), বিএনপি নেতা মো. নুরে আলম (ডানে) | ছবি: সংগৃহীত
1

গাজীপুরের শ্রীপুরে রাস্তা নির্মাণের অনিয়মের অভিযোগের তথ্য জানতে ঘটনাস্থলে যাওয়ায় এক সাংবাদিকের পা ভেঙে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় এক বিএনপি নেতা ও ইউপি সদস্য। গতকাল (সোমবার, ২০ অক্টোবর) বেলা দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর বিএনপি নেতা ও তার ছেলের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন হুমকি পাওয়া সাংবাদিক শিহাব খান। তিনি সংবাদভিত্তিক একটি টিভি চ্যানেলর শ্রীপুর উপজেলা প্রতিনিধি। অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মো. নুরে আলম (৫০) উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের গাজীপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল মজিদের ছেলে।

তিনি গাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের আট নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। অপর অভিযুক্ত মো. কাজল (২৮) নুরে আলমের ছেলে।

ফোন করে সাংবাদিককে হুমকি দেয়ার একটি অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় হুমকি দিচ্ছেন বিএনপি নেতা নুরে আলম।

তিনি বলেন, ‘আপনে কে জানি? আমহেরা যে বাটপার অইছুইন না, এই এলাকায় ঢুকলে ঠেঙের নালা ভাইঙ্গালাম। তর মতো সাংবাদিকরে আমি… যেহানই পায়াম তরে শ্রীপুর থানার মধ্যে, বাইরাইয়া ঠ্যাং ভাইঙ্গালাম।’

একপর্যায়ে মুঠোফোনে পাশে থাকা তার ছেলে কাজল কথা বলেন। তিনিও সাংবাদিক শিহাব খানকে হুমকি দেন। কথাবার্তার একপর্যায়ে পাশে থাকা নুরে আলমকে বলতে শোনা যায়, ‘এই সাংবাদিক তো গণধোলাই চাইতাছে।’

আরও পড়ুন:

এ বিষয়ে সাংবাদিক শিহাব খান জানান, শ্রীপুরের গাজীপুর ইউনিয়নের নছুর পুকুর এলাকায় রাস্তা তৈরির অনিয়মের খবর পেয়ে তিনি সেখানে যান। অভিযোগ ছিল, একজন ব্যক্তির বাড়িতে যাতায়াতের রাস্তা তৈরি হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের টাকায়। বিশেষ সুবিধা নিয়ে পুরো কাজ করে দিচ্ছেন ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা নুরে আলম। তথ্য সংগ্রহ করে ফিরে আসার পর বেলা ১টা ১৯ মিনিটে তাকে ফোন করে হুমকি দিয়েছেন ওই ইউপি সদস্য ও তার ছেলে। পরে এ ঘটনায় তিনি শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. নূরে আলম বলেন, ‘আমি রাগের মাথায় এ কথা বলে ফেলছি। আমি রাস্তায় কোনো ধরনের নিম্নমানের ইটা ব্যবহার করিনি কোনো দিন। সাংবাদিক আমাকে না জানিয়ে উপরের স্যারদের জানিয়েছে বলে একটু রাগে এমন কথা বলছি।’

গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’

এ প্রসঙ্গে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল বারিক বলেন, ‘হুমকির বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এসএস