ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর বৈশ্বিক ডলারের বাজার অস্থিরতা আর ডলারের বিপরীতে লাগাতার টাকার অবমূল্যায়নে রিজার্ভের ঘর নামতে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আইএমএফসহ দাতা সংস্থাগুলোতে ঋণ সহায়তার আবেদন করে বাংলাদেশ।
ঋণ পাওয়ায় যেসব শর্ত ছিল সেখানে ব্যাংক খাতের সংস্কার, খেলাপিঋণ কমাতে পদক্ষেপ ও ভর্তুকি কমানোসহ নানা শর্ত দেয়া থাকলেও বিগত গভর্নরের সময় আর্থিক খাতের স্থিতির সব চেষ্টা ব্যর্থ করে কমতে থাকে রিজার্ভ, মুদ্রানীতি শক্তিশালী করা হলেও টাকা ছাপানোর সাথে বাড়তে থাকে মূল্যস্ফীতি-অর্থপাচার আর খেলাপির সংখ্যা, ভাঙতে থাকে আর্থিক খাতের কাঠামো।
এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে চলমান ঋণের সাথে আর্থিক খাত সংস্কারে অতিরিক্ত ৩ বিলিয়ন ঋণ সহায়তা চেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এবার সুনির্দিষ্টভাবে ব্যাংকখাত সংস্কার, অর্থপাচার রোধ ও ট্যাক্স রিটার্ন পদ্ধতি আধুনিকায়নে সহায়তার চায় বাংলাদেশ।
তা নিয়েই আজ (মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে অর্থ মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করে আইএমএফ প্রতিনিধি দল। বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা জানান, আইএমএফের কাছ থেকে যে বাড়তি ঋণ পাওয়া যাবে তা অর্থপাচার প্রতিরোধ, ব্যাংক ও রাজস্ব খাত সংস্কারে ব্যবহার করা হবে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা বলেছি সংস্কারে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। ব্যাংক ও রাজস্ব খাত সংস্কারে সময় কিছুটা লাগবে। আমাদের এই সংস্কারে সোর্স গ্যাপ কত লাগবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
অর্থবিভাগের সাথে বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করেন আইএমএফ মিশনপ্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও'র দল। সব ধরনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সম্ভাব্য অর্থায়নের প্রয়োজনীতা মূল্যায়ন করা হবে সাতদিনের এই সফরে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, অর্থনীতি স্বাভাবিক করতে বাংলাদেশ সঠিক পথে থাকলেও রিজার্ভের লক্ষ্য অর্জনে পিছিয়ে থাকায় তেমন সন্তুষ্ট নয় আইএমএফ। তবে যেভাবেই হোক রিজার্ভ পূরণ করার কথা সংস্থাটিকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, 'যে কোন ভাবে রিজার্ভ পুরণ করা হবে আইএমএফ। বাংলাদেশ ব্যাংক সঠিক পথে রয়েছে বলে আইএমএফ জানিয়েছে। তাদের মতে আমাদের ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ ২৪ বিলিয়ন থাকার কথা থাকলেও কিন্তু আছে ১৯.৪৭ বিলিয়ন ডলার (বিপিএম ৬)।'
চলতি ঋণে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩ কিস্তিতে ২.৩১ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। আগামী ডিসেম্বরে পরবর্তী ঋণের কিস্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।