কোটা সংস্কার আন্দোলনের ১৬ জুলাইয়ে খুব কাছ থেকে করা পুলিশের কয়েক রাউন্ড গুলিতে আবু সাঈদের লুটিয়ে পড়ার দৃশ্য দেখেছে গোটা দেশ।
কিন্তু এ ঘটনা তদন্তে পুলিশের প্রাথমিক তথ্য বর্ণনাতে লেখা হয়েছে, আন্দোলনকারীদের ছোড়া গুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের এক পর্যায়ে আবু সাঈদের মৃত্যু হয়। ছাত্র- জনতার অভ্যুত্থানে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর গুলিতে নিহত এ রকম অনেক ঘটনায়ই উল্লেখ করা হয়নি প্রকৃত তথ্য।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটি জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহতের তালিকা প্রকাশ ও প্রস্তুতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করছিল তখন প্রশ্ন ছিল, এসব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কী করে সহায়তা করবে?
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য সচিব তারিকুল ইসলাম বলেন, 'বিগত সরকার গত ৫ আগস্ট পতনের আগে পর্যন্ত বিভিন্নভাবে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে। তারা অনেককে ডেথ সার্টিফিকেট দেয়নি। জোর করে তাদের কবর দিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এই যে মানুষগুলোর সাথে যে প্রতারণা করা হয়েছে। তাদের প্রকৃত জাস্টিস তাদের কাছে পৌঁছাতে হবে।'
এখানে এই কমিটির সদস্যরা জানান, সারাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ঠেকাতে শহীদ ও আহতদের একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য তালিকা তৈরি করতে তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য ব্যবস্থাপনা শাখার সঙ্গে কাজ করছেন। এক্ষেত্রে একটি ওয়েবসাইট থাকবে, যাতে সরকারি হাসপাতালগুলো থেকে আহত ও নিহতদের তালিকা ইনপুট দেয়া যাবে। তারা বলছেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদেরও এই ইনপুট দেওয়ার প্রবেশাধিকার দেওয়ার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন।
তারিকুল ইসলাম বলেন, 'নিহত শহীদদের আইডেন্টিটি প্রমাণের জন্য যাদের ডেথ সার্টিফিকেট নেই তাদের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে উপজেলাভিত্তিক এবং সরকারি কার্যক্রম পরিচালনায় প্রতিটি জেলায় সিভিল সার্জনসহ সকলকে নির্দেশনা দেয়ার জন্য আলোচনা করা হয়।'
তিনি আরও বলেন, 'আইনগতভাবে তার বৈধতার জন্য প্রয়োজনে আবার কবর থেকে তুলে ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করা এবং ভেরিফাই করার প্রস্তাব আমাদের দেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের প্রশাসন সার্বিক সহায়তা করবে।'
এই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে তথ্য নিয়ে এ নাগাদ তারা ৮১৬ জন নিহতের এবং ১৯১৫ জন আহতের একটা তালিকা দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস শাখায়। যদিও সরকারি হিসেবে, নিহতের এই সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৪৯৫ জন। এছাড়া এখানে আরও জানানো হয়, ১৯ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত তার আগের ২০ দিনের তুলনায় প্রায় ১১ হাজার বেশি আহতের তথ্য রেকর্ড হয়েছে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে।