জানা গেছে, গোলাম মুরশিদ পারকিনসনসহ বার্ধক্যজনিত অন্যান্য রোগে ভুগছিলেন। কয়েক মাস ধরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ লন্ডনের স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় মারা গেছেন।
১৯৪০ সালের ৮ এপ্রিল গোলাম মুরশিদ বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে পড়াশোনা শেষ করেন। পরে তিনি ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মজীবন শুরু করেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রায় দুই দশক ধরে তিনি অধ্যাপনা করেন। লন্ডনের বিবিসি বাংলা বিভাগে ১৯৮৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন।
এছাড়া ১৯৯১ সাল থেকে লন্ডনের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা ও গবেষণায় জড়িত ছিলেন। তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ অরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের একজন গবেষণা সহযোগী ছিলেন। ভয়েস অব আমেরিকাতে তিনি প্রায়শই কণ্ঠ দিতেন।
তিনি ১৯৮২ সালে সৃজনশীল ও গবেষণামূলক কাজের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ২০২১ সালে তিনি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক লাভ করেন। এছাড়াও তিনি অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
তিনি তার চিন্তার ব্যাপ্তি, গভীরতা, ঋজুতা, স্বকীয়তায় বাঙালিদের মধ্যে অনন্য ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। তার শারীরিক বয়স যা-ই হোক, মানসিকভাবে তিনি সব সময় ছিলেন ভীষণ দৃঢ়চেতা।
গোলাম মুরশিদ বাংলার সাহিত্য, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সমাজ নিয়ে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ৩০টিরও বেশি বই ও অসংখ্য প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন।
তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হচ্ছে আশার ছলনে ভুলি, কালান্তরে বাংলা গদ্য, রাসসুন্দরী থেকে রোকেয়া: নারীপ্রগতির একশো বছর, সমাজ সংস্কার আন্দোলন ও বাংলা নাটক, রবীন্দ্রবিশ্বে পূর্ববঙ্গ পূর্ববঙ্গে রবীন্দ্রচর্চা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সাংস্কৃতিক পটভূমি, হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি প্রভৃতি।