মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন
0

আবারও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে ইসরাইল-হামাসের সাথে আলোচনা

গাজায় চলমান আগ্রাসনের মধ্যে আবারও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে ইসরাইল ও হামাসের সাথে আলোচনায় বসবেন মধ্যস্থতাকারীরা। আলোচনায় অংশ নিতে কাতার সফর করবে ইসরাইলের বিশেষ প্রতিনিধিদল। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন সিআইএ ও মোসাদ প্রধানসহ মিশরের গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। এদিকে গাজার নুসেইরাতে জাতিসংঘের একটি স্কুলে ইসরাইলি হামলায় শিশুসহ অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ধুলোর সাথে মিশে গেছে ফিলিস্তিনি শিশুদের একটি স্কুল ভবন। জাতিসংঘের উদ্যোগে ভবনটিতে চালু হয় শিশু শিক্ষা কার্যক্রম। গেল বছরের ৭ অক্টোবর থেকে স্কুলটি অস্থায়ী শরণার্থী শিবির হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। গতকাল শনিবার গাজার নুসেইরাতে ভবনটি লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরাইলি সেনাবাহিনী।

গাজার এক বাসিন্দা বলেন, 'কোথায় হামলা হয়েছে তা দেখতে ছুটে আসি। একসময় শিশুরা এখানে খেলতে আসতো, পড়তে আসতো। এখন ওদের মরদেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে আছে। সাধারণ মানুষও নিহত হয়েছে। অথচ এটা একটা সাধারণ স্কুল।'

যুদ্ধবিরতির আগেই ইসরাইল তাদের মেরে ফেলতে চায় জানিয়ে অপর এক গাজাবাসী বলেন, 'কী করব বুঝতে পারছি না। ভয়ে চিন্তাভাবনা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। শ্রেণিকক্ষে বসে ছিলাম, তখনই আমাদের গায়ে জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ে।'

হামলার পর রেড ক্রিসেন্টের সহায়তায় আহতদের আল-আকসা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও বিপুলসংখ্যক মানুষকে সেবা দেয়ার সক্ষমতা নেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির। উপায় না পেয়ে হাসপাতালের করিডোরেই রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।

এদিকে গাজায় আগ্রাসন অব্যাহত রাখার পাশাপাশি যুদ্ধবিরতি বিষয়ক আলোচনা নিয়েও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। আলোচনায় অংশ নিতে সোমবার (৮ জুলাই) কাতারে যাচ্ছে বিশেষ প্রতিনিধি দল। তবে এমন খবরে আশ্বস্ত হতে পারছেন না ইসরাইলি জিম্মি পরিবারের সদস্যরা। এমন প্রেক্ষাপটে গেল শনিবার আবারও জিম্মিদের মুক্তি ও নেতানিয়াহু সরকারের পদত্যাগ চেয়ে তেল আবিবে বিক্ষোভ করেন হাজারও মানুষ।

আন্দোলনকারীরা বলেন, আমাদের একটাই দাবি। জিম্মিদের দেশে ফিরিয়ে আনুন। কিন্তু নেতানিয়াহুর পদত্যাগ ছাড়া তা সম্ভব না। এখানে উপস্থিত বেশিরভাগ মানুষ এই সরকারকে সমর্থন করে না। এই দেশের নেতারা তাদের আসল চেহারা সবসময় লুকিয়ে রাখতে চায়। আন্দোলনের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে জানাতে চাই এই নেতারা আমাদের প্রতিনিধিত্ব করেন না। নেতানিয়াহু আমাদের প্রতিনিধিত্ব করেন না। আমরা পরিবর্তন চাই, নতুন নেতৃত্ব চাই।

গাজায় চলমান আগ্রাসনে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের দেশে দেশে। যুক্তরাজ্যের সেন্ট্রাল লন্ডনে ফিলিস্তিনের সমর্থনে আয়োজিত বিক্ষোভে অংশ নেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। গাজায় আগ্রাসন বন্ধে নতুন সরকারকে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তারা। এসময় আইন না মানায় ৪ বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ।

এক বিক্ষোভকারী বলেন, 'প্রত্যাশা করি নতুন সরকারের মেরুদণ্ড শক্ত করে স্বীকার করবে ফিলিস্তিনে যা চলছে তা গণহত্যা। কিয়ার স্টারমার এর আগেও এ বিষয়ে কথা বলেছেন। তিনি নিজে একজন আইনজীবী। ফলে তার জানা উচিত ইসরাইল যা করছে তা সম্পূর্ণ বেআইনি।'

ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ জর্ডানে। 'আমাদের উদ্দেশ্য ও প্রত্যাশা এক' এই স্লোগানে মুখরিত হয় রাজপথ। এসময় ইসরাইলের সঙ্গে জর্ডানের শান্তি চুক্তি বাতিলের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর