সংস্কৃতি ও বিনোদন , অন্যান্য
দেশে এখন
0

বকুলতলায় চৈত্র সংক্রান্তির নানা আয়োজন

প্রথা মেনে পুরাতনকে বিদায় জানাতে চৈত্র সংক্রান্তির আয়োজনে মেতেছিলো নগরবাসী। বাংলা বছরের শেষ দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলার বকুলতলায় সংক্রান্তির আয়োজনে আহ্বান জানানো হয় নতুনকে, যেখানে থাকবে না অতীতের গ্লানি।

নতুন বছরের আবাহনে মিলিত হওয়ার পালে লেগেছে হাওয়া। তাতে যেন প্রাণসঞ্চার হয়েছে প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে। সব সংকীর্ণতা দূর করে এখন সার্বজনীন উৎসবে মেতে ওঠার অপেক্ষা।

চৈত্রের বিদায়পর্বে চারুকলার বকুলতলায় সংক্রান্তি উৎসবের আমেজ। পুরনোকে বিদায় জানাতে ঢল নামে সব শ্রেণীপেশার মানুষের।

বাঁশির মোহনীয় সুরের মূর্ছনায় শুরু হয় আয়োজন। গান-কবিতা আর নৃত্যের তালে ছন্দময় আবেশে মগ্ন হন সবাই। ছুটির আমেজে নগরবাসীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। নতুনকে স্বাগত জানানোর প্রত্যয় সবার কণ্ঠে।

বকুলতলায় কথা বলছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি

তারা বলেন, বাঙালীর ধর্ম আর উৎসব মিলেমিশে থাকে। ধর্মসত্তা আর জাতিসত্তা একটা সম্প্রীতির মধ্যে থাকে। এগুলোকে হিংসার দ্বারা আমরা কলুষিত না করি। নতুন বছর মানেই নতুন একটা প্রস্তুতি, নতুন একটা প্রত্যাশা। সকলের ভালো হোক।

চৈত্র সংক্রান্তির মধ্যদিয়ে যাবতীয় অশুভকে পেছনে ফেলে সার্বজনীন উৎসবে মেতে ওঠার আহ্বান জানান সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, 'সারাদেশে সকল পর্যায়ে আমাদের একটা সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণের প্রয়োজন রয়েছে। চৈত্র সংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখ অন্ধকার দূর করে দেয়ার জন্য আমাদের হাতিয়ার।'

এদিকে চৈত্র সংক্রান্তির অন্যতম আয়োজন চরক পূজাকে ঘিরে নগরে ছিল নানা আয়োজন। মোমবাতির আলোয় পুরাতন বছরের দুঃখ, গ্লানি না পাওয়ার ব্যাথা ভুলতে আয়োজন হয় চরক পূজার। সনাতন ধর্মরীতি অনুসারে যাকে নীল পূজাও বলা হয়।

চৈত্র সংক্রান্তির অন্যতম আয়োজন চরক পূজার একাংশ

পুরান ঢাকার শিব আশ্রয় কমিটির আয়োজনে বাংলা বছরকে বিদায় জানাতে শাঁখারী বাজারে এক দশক ধরে চলে আসছে এ আয়োজন।

মূলত এদিন সনাতন ধর্মের সন্নাসীরা চরক গাছকে ধুয়ে-মুছে পরিস্কার করে রাখেন ভক্তদের মনোবাসনা পূরণে। জীবনের অপূর্ণতা ঘোচাতে পূজা-অর্চনায় অংশ নেন ভক্তরা।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ছাড়িয়ে চরক পূচার আচার-অনুষ্ঠান সাড়া ফেলেছে রাজধানীতেও।

শিব আশ্রয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শ্রী সম্ভুনাথ সেন বলেন, 'আমাদের কমিটিতে ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য আছে। কিশোরদেরকে নিয়ে আমি এ সংগঠনটা করেছি। এটা আমার বহুদিনের ইচ্ছে ছিল।'

পুরনো যাবতীয়কে বিদায়ের মধ্যদিয়ে নতুন বছরে আলোর পথে অগ্রযাত্রা বিরাজ থাকবে। মঙ্গলের পথে কাঁধে কাঁধ রেখে চলবে সবাই। এমন প্রত্যাশাই সবার কণ্ঠে।