ফেরিডুবির ৬ দিন পরও পদ্মায় ডুবুরিদের রয়েছে কর্মব্যস্ততা। পানির নিচে থাকা ফেরির সাথে বেলুন লাগিয়ে ওজন কিছুটা হালকা করার প্রচেষ্টা করছে তারা।
পাশেই অপেক্ষায় রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় উদ্ধারকারী জাহাজ দৈত্যাকৃতির প্রত্যয়। সাথে আছে তারচেয়ে অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী রুস্তম ও হামজাও। কিন্তু সবাই মিলেও ৭ দিনে ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধা তুলতে সক্ষম হয়নি। ফেরিতে থাকা ৯টি ট্রাকের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৭টি। আর বাকি দুইটি এখনও শনাক্ত হয়নি। ধীরগতির উদ্ধারে ট্রাকচালকরা প্রশ্ন তুলছেন উদ্ধারকারী জাহাজের সক্ষমতা নিয়ে।
এক ট্রাকচালক বলেন, 'এদের ক্রেন ভালো না, তারা এই ক্রেন দিয়েই সাত দিন হলে কাজ চালাচ্ছে। আমাদের থাকার কোনো জায়গা নেই। ঘুমানোর জায়গা নেই। উদ্ধার কাজ শেষ করতে পারছে না।'
যদি লঞ্চ বা ফেরি দুর্ঘটনা হয়, উদ্ধার করতে দীর্ঘসময় লেগে যায়। অনেক সময় পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া নৌযানের হদিসও মেলে না। সেখানেই প্রশ্ন ওঠে কোটি কোটি টাকা খরচ করে কেন যথাযথ সক্ষমতার উদ্ধারকারী জাহাজ কেনা হলো না?
গত ১৭ই জানুয়ারি ৯টি পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে পদ্মা নদীর পাটুরিয়া ঘাটের কাছে ডুবে যায় রজনীগন্ধা ফেরি। উদ্ধারকাজে সরাসরি অংশগ্রহণকারী ডুবুরি ও উদ্ধারকারী জাহাজের কর্মকর্তারা জানান, ডুবন্ত ফেরিটি তুলতে যে সক্ষমতা দরকার তা উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ের নেই। তারা বলছেন, প্রত্যয়ের সর্বোচ্চ ২৫০ টন ওজনের নৌযান তোলার সক্ষমতা থাকলেও ফেরির ওজন ২৮০ টন। এছাড়া ডুবে যাওয়ায় ফেরির ওজন আরও বেড়েছে বলে দাবি তাদের।
উদ্ধারকারী জাহাজের দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিএ'র নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ শাজাহান জানান, প্রত্যয়ের চেয়ে ফেরির ওজন অনেক বেশি হওয়ায় তারা অসহায়। দেশে ২ হাজার টন সক্ষমতার উদ্ধারকারী জাহাজ প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
বিআডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ বলছেন, 'আরও বেশি সক্ষমতার জাহাজ কিনতে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত কাগজ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। দ্রুতই এর অনুমোদন হয়ে যাবে আশা করি।'
এর আগে বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদীতে লঞ্চডুবির ঘটনাতেও বেলুন দিয়ে ডুবে যাওয়া লঞ্চ হালকা করে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ের মাধ্যমে উদ্ধার করতে হয়েছে।