ইসরাইলের একের পর এক হামলায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজার খান ইউনিস। গৃহহীন ৩০ হাজার মানুষের বাসস্থান জাতিসংঘের ৫টি শরণার্থী শিবিরেও চালানো হয়েছে হামলা। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দিনভর হামলায় শুধু খান ইউনিসেই ঝড়েছে কমপক্ষে ৫০টি তাজা প্রাণ।
আহতদের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করতে ইসরাইলি আগ্রাসনের নতুন লক্ষ্যবস্তু গাজার হাসপাতাল। আল-মাওয়াসি জেলায় অভিযানে হামলা চালানো হয়েছে আল-খাইর হাসপাতালে। মেডিকেল স্টাফদের আটকের পাশাপাশি জব্দ করা হয়েছে ওষুধপত্র। আল-নাসের হাসপাতাল পরিণত হয়েছে গণকবরে।
এমন পরিস্থিতিতে নিরীহ জনগণকে রক্ষায় ইসরাইলকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজের নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জানান আত্মরক্ষার অধিকার থাকলেও তেল আবিব আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলবে বলে আশা করে ওয়াশিংটন।
হোয়াইট হাউজের নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, 'আমরা আশা করি, ইসরাইল আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলবে। হাসপাতালে আশ্রয় নেয়া মানুষ, মেডিকেল স্টাফ, চিকিৎসক ও রোগীদের রক্ষায় যতটুকু সম্ভব কাজ করবে।'
চলমান যুদ্ধে গাজায় প্রাণহানি বাড়তে থাকায় ইসরাইলের ওপর চাপ বাড়ছে। বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের ওপর জোর দিয়েছেন জোটটির নেতারা। হামাসকে নির্মূল করার পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য জোটের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধানের।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেফ বোরেল বলেন, 'দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান ছাড়া অন্য কোন পন্থা কী আপনার কাছে আছে? সব ফিলিস্তিনিদের মেরে ফেলবেন? নাকি সবাইকে দেশ ছাড়া করবেন? ২৫ হাজার মানুষ ইতোমধ্যেই নিহত হয়েছেন। হামাসকে নির্মূলের পরিকল্পনা কাজে আসছে না। কারণ ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ঘৃণার বীজ বপন করেছে।'
যুদ্ধের ১০৯ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো ১৩০ জিম্মিকে মুক্ত করতে পারেনি ইসরাইল। তাই সোমবার দেশটির পার্লামেন্টের অর্থ মন্ত্রণালয় কমিটির বৈঠকে ঢুকে বিক্ষোভ করতে শুরু করেন জিম্মিদের স্বজনরা। উত্তেজনার একপর্যায়ে বৈঠক ছেড়ে বের হয়ে পড়েন কমিটির প্রধান।
এদিকে জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে হামাসকে ৬০দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে ইসরাইল। দেশটির ২ কর্মকর্তার বরাতে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস। ইতোমধ্যেই কাতার ও মিশরের মাধ্যমে হামাসের শীর্ষ নেতাদের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।